সুন্দরবনে বাঘ ও শাবকের সংখ্যা বেড়েছে। ২০১৮ সালের তুলনায় চলতি বছরের জরিপে ১১টি বাঘ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সচিবালয়ে ‘সুন্দরবন বাঘ জরিপ-২০২৪’র ফলাফল ঘোষণা উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা এ তথ্য জানান।
২০১৮ সালের জরিপে ১১৪টি বাঘ পাওয়া গিয়েছিল। নতুন জরিপে পাওয়া গেছে ১২৫টি বাঘ। সেই হিসাবে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে ১১টি।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, সার্বিক বিচার বিশ্লেষণে ২০২৩-২০২৪ সালে সুন্দরবনে জরিপে বাঘের সংখ্যা ১২৫টি পাওয়া যায়। প্রতি ১০০ বর্গকিলোমিটার বাঘের ঘনত্ব পাওয়া যায় দুই দশমিক ৬৪।
তিনি আরও বলেন, সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা নির্ণয়ে সর্বপ্রথম ২০১৫ সালে আধুনিক পদ্ধতি ক্যামেরা ট্রাপিংয়ের মাধ্যমে বাঘ জরিপ করা হয়। সে জরিপে বাঘ পাওয়া যায় ১০৬টি। তখন প্রতি ১০০ বর্গকিলোমিটারে বাঘের ঘনত্ব ছিল দুই দশমিক ১৭।
২০১৮ সালে দ্বিতীয় পর্যায়ে ক্যামেরা ট্রাপিংয়ের মাধ্যমে সুন্দরবনের বাঘ জরিপে ১১৪টি বাঘ পাওয়া যায়। প্রতি ১০০ বর্গকিলোমিটারে বাঘের ঘনত্ব ছিল দুই দশমিক ৫৫।
উপদেষ্টা বলেন, সুন্দরবনে ক্যামেরা ট্রাপিংয়ের মাধ্যমে তৃতীয় পর্যায়ে বাঘ জরিপ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ২০২৪ সালের মার্চে শেষ হয়।
বাঘ জরিপে সুন্দরবনের সাতক্ষীরা, খুলনা, চাঁদপাই ও শরণখোলা রেঞ্জে চার ব্লকে ৬০৫টি গ্রিডে স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরা বসানো হয়।
সুন্দরবনে ৬০৫ গ্রিডে পর্যায়ক্রমে এক হাজার ২১০টি ক্যামেরা ৩১৮ দিন রেখে দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৩৬৮টি গ্রিডের ক্যামেরায় বাঘের ছবি পাওয়া যায়। ক্যামেরার ১০ লাখের বেশি ছবি ও ভিডিও থেকে শুধুমাত্র বাঘের ছবি পাওয়া যায় সাত হাজার ২৯৭টি।
বাঘের ডোরাকাটা দাগ ও শরীরের নানা অংশের ছবি বিশ্লেষণ করে একক ও অনন্য বাঘের ছবি শনাক্ত করা হয়।
২০২৩-২৪ সালের বাঘ জরিপে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাঘ শাবকের ছবি পাওয়া যায় জানিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা জানান, বাঘ শাবকের সংখ্যা জরিপের ফলাফলে অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। কারণ ছোট থেকে পূর্ণবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত বাঘ শাবকের মৃত্যুর হার অনেক বেশি হয়ে থাকে।
২০২৩-২৪ সালের বাঘ জরিপে ২১টি বাঘ শাবকের ছবি পাওয়া গেছে। ২০১৫ ও ২০১৮ সালের বাঘ জরিপে পাঁচটি করে বাঘ শাবকের ছবি পাওয়া গিয়েছিল।
সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এম এ আজিজ বলেন, বাঘের প্রজননের জন্য সুন্দরবনের অনুকূল পরিবেশ আছে। আগামীতে বাঘের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।