আজ ১৮ সেপ্টেম্বর, বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে বিশ্ব বাঁশ দিবস। প্রতিবছর এই দিনটি উদযাপন করা হয় বাঁশের পরিবেশবান্ধব বৈশিষ্ট্য, বহুমুখী ব্যবহার এবং টেকসই উন্নয়নে এর গুরুত্ব তুলে ধরার লক্ষ্যে।
২০০৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে আয়োজিত অষ্টম বিশ্ব বাঁশ কংগ্রেসে এই দিবসটি প্রথম স্বীকৃতি পায়। ওই সম্মেলনে বিশ্বের প্রায় ১০০টি দেশের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। দিবসটির প্রস্তাব দেন বিশ্ব বাঁশ সংস্থার তৎকালীন সভাপতি কামেশ সালাম।
বাঁশ এক প্রকার চিরসবুজ, বহুবর্ষজীবী ঘাসজাতীয় উদ্ভিদ। পৃথিবীতে প্রায় ৩০০ প্রজাতির বাঁশ রয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট ৩৩ প্রজাতি সংরক্ষণ করেছে।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO)-এর তথ্য অনুযায়ী- সর্বাধিক বাঁশ প্রজাতির দেশ চীন (৫০০ প্রজাতি), এরপর ব্রাজিল (২৩২ প্রজাতি), আর বাংলাদেশ রয়েছে অষ্টম অবস্থানে।
বাংলাদেশে প্রচলিত বাঁশের জাতের মধ্যে রয়েছে: মুলি, তল্লা, আইক্কা, ছড়ি ইত্যাদি। এগুলোর ব্যবহার গ্রামীণ জীবন, হস্তশিল্প ও কৃষি নির্ভর অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বাঁশ শুধু গৃহনির্মাণ বা আসবাবপত্র তৈরিতে নয়, খাদ্য হিসেবেও জনপ্রিয়। এর কচি অঙ্কুর, যা ‘বাঁশ কোড়ল’ নামে পরিচিত, পাহাড়ি অঞ্চলে বিশেষভাবে জনপ্রিয়। এতে রয়েছে নানা ধরনের পুষ্টিগুণ, যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
বাংলাদেশে ‘বাঁশ’ শব্দটি অনেক সময় কটাক্ষমূলক বা রসাত্মকভাবে ব্যবহৃত হলেও, আন্তর্জাতিক পরিসরে এর রয়েছে সম্মানজনক প্রতীকী অর্থ। বিশেষ করে চীনা সংস্কৃতিতে বাঁশকে শুভ শক্তি, সমৃদ্ধি ও নেতিবাচক শক্তি প্রতিহতকারী প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। চীনের শিল্প, সংগীত ও স্থাপত্যে বাঁশের প্রভাব চোখে পড়ে।
বিশ্ব বাঁশ দিবস পালনের মূল লক্ষ্য- বাঁশের টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করা, পরিবেশবান্ধব উপাদান হিসেবে এর গুরুত্ব প্রচার করা, বাঁশভিত্তিক শিল্প সম্ভাবনাকে বৈশ্বিক পর্যায়ে তুলে ধরা।
পরিবেশবান্ধব, দ্রুত বর্ধনশীল ও বহুমুখী এই উদ্ভিদ পরিবেশ রক্ষায় যেমন ভূমিকা রাখে, তেমনি বিকল্প কাঠ ও প্লাস্টিক পণ্য হিসেবে এর ব্যবহার বিশ্বজুড়ে বাড়ছে।