জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ (মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে যাচ্ছেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
এই মামলায় তিনি শুরুতে আসামি ছিলেন, তবে পরে স্বপ্রণোদিতভাবে দায় স্বীকার করে রাষ্ট্রপক্ষের রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিতে রাজি হন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলের সামনে আজ সকালেই ক্যামেরা ট্রায়ালের মাধ্যমে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হবে বলে নিশ্চিত করেছে প্রসিকিউশন। মামলাটির অপর দুই প্রধান আসামি হচ্ছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
এর আগে গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে মামলার সব দায় স্বীকার করেন মামুন। একই সঙ্গে তিনি আদালতের কাছে নিজেকে রাজসাক্ষী হিসেবে বিবেচনার অনুরোধ জানান। আদালত তা গ্রহণ করে তাকে রাজসাক্ষী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেন।
এ মামলায় ইতোমধ্যে ৩৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এদের মধ্যে চিকিৎসক, সাংবাদিক, প্রত্যক্ষদর্শী এবং শহীদ পরিবারের সদস্যরা রয়েছেন। তাদের জবানবন্দিতে উঠে এসেছে গত বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে দেশজুড়ে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও নিপীড়নের নানা ভয়াবহ বর্ণনা। সাক্ষীরা এসব ঘটনার জন্য সরাসরি শেখ হাসিনা, কামালসহ সংশ্লিষ্টদের দায়ী করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
গত ১ সেপ্টেম্বর মামলার দশম দিনের শুনানিতে আরও ছয়জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এদের মধ্যে ছিলেন একজন চিকিৎসক, একজন সাংবাদিক ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী।
গত ১০ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিকভাবে শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং চৌধুরী মামুনের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয়। প্রসিকিউশন পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি নির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগপত্রটি প্রায় ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার বিশাল এক নথি, যাতে রয়েছে দুই হাজারের বেশি পৃষ্ঠার তথ্যসূত্র, চার হাজার পৃষ্ঠার জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণ এবং শহীদদের তালিকার প্রায় আড়াই হাজার পৃষ্ঠার বিবরণ।
মামলাটিতে সাক্ষী হিসেবে মোট ৮১ জনের নাম রয়েছে। গত ১২ মে এই মামলার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন চিফ প্রসিকিউটরের কাছে জমা দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।