গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর বেপরোয়া হামলা অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণে শিশু, সাংবাদিক ও ত্রাণপ্রার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করে অন্তত ৭৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
এর মধ্যে ৩২ জনই খাদ্য সহায়তার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। আহত হয়েছেন আরও অনেক নিরীহ মানুষ।
প্রায় ২৩ মাস ধরে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর নামে ভয়াবহ নিপীড়ন চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। সম্প্রতি গাজা সিটি পুরোপুরি দখলের ঘোষণা দেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এতে সহায়তা করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্লেষকরা বলছেন, সেই সমর্থনের জোরেই আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে নেতানিয়াহুর প্রশাসন।
রোববার সকাল থেকেই গাজা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ট্যাঙ্ক হামলা ও বুলডোজার দিয়ে বসতবাড়ি গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। রিমাল এলাকায় একটি আবাসিক ভবনে হামলায় ৫ জন নিহত হয়েছেন। আল-কুদস হাসপাতালের পাশে ত্রাণপ্রার্থীদের তাঁবুতে আগুন ধরে গেলে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে।
গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয়ের পরিচালক ইসমাইল আল-থাওয়াবতা বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী আবাসিক এলাকায় বিস্ফোরক রোবট ব্যবহার করছে। গত তিন সপ্তাহে ৮০টিরও বেশি বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে তারা।
রোববারই আল-কুদস আল-ইয়াওম টিভির সাংবাদিক ইসলাম আবেদ ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন। এ নিয়ে গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ২৪৭ থেকে ২৭০ জনের বেশি সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানায় স্থানীয় গণমাধ্যম।
গাজা স্বাস্থ্য দপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৬৩ হাজার ৪৫৯ জন ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই পরিস্থিতিকে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে আখ্যায়িত করছে এবং যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়েছে।