4:15 pm, Wednesday, 27 August 2025

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ছবি: সংগৃহীত

Monzu-Info-Tech
Monzu-Info-Tech

আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৬ সালের এদিনে তিনি তৎকালীন পিজি হাসপাতালে (বর্তমান বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) ইন্তেকাল করেন। পরে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সমাহিত করা হয়।

স্বাধীনতাকামী কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ (২৪ মে ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দ) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে তিনি ‘দুখু মিয়া’ নামে পরিচিত ছিলেন। তার পিতা কাজী ফকির আহমেদ এবং মাতা জাহেদা খাতুন।

বাংলা সাহিত্যপ্রেমীদের কাছে তিনি বিদ্রোহী কবি হিসেবে খ্যাত হলেও তার সৃষ্টিকর্মের বিস্তার অনেক বৃহৎ। কবিতা, গান, উপন্যাস, গল্প, নাটক, প্রবন্ধ ও চলচ্চিত্রে তিনি রেখেছেন স্বতন্ত্র স্বাক্ষর। পাশাপাশি তিনি সাংবাদিক, গায়ক ও অভিনেতা হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। সংগীতে তার অসংখ্য রাগ-রাগিনী আজও অমর হয়ে আছে।

প্রেম, বিদ্রোহ, সাম্যবাদ ও জাগরণের কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার কবিতা ও গানের মাধ্যমে শোষণ ও অবিচারের বিরুদ্ধে সংগ্রামে জাতিকে প্রেরণা জুগিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তার সৃষ্টি জাতিকে উদ্বুদ্ধ করার গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে কাজ করেছে। নজরুলের সাহিত্য ও সংগীত বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণের সূচনা করেছিল। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ এবং তার রচনা জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার পর ১৯৭২ সালের ২৪ মে কবি নজরুল ইসলাম ও তার পরিবারকে ঢাকায় আনা হয় এবং তাকে জাতীয় কবির মর্যাদা দেওয়া হয়। বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক বিশেষ সমাবর্তনে তাকে সম্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রি প্রদান করে। একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি তিনি একুশে পদকে ভূষিত হন।

বাংলাদেশের জাতীয় কবির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেয়েছেন কাজী নজরুল ইসলাম। ১৯৭২ সালের ২৪ মে বাংলাদেশে আসার তারিখ থেকে তাকে ‘জাতীয় কবি’ ঘোষণা করা হয়।

জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকীর কর্মসূচি-

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান সকাল ৮টায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে মৃত্যুবার্ষিকীর কর্মসূচি। বাংলা একাডেমি কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। বিকেল ৪টায় একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ‘নজরুলের মৌলচেতনা অদ্বৈতবাদী সমন্বয়ের’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন নজরুল গবেষক অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক। আলোচনায় অংশ নেবেন নজরুল গবেষক ড. সৈয়দা মোতাহেরা বানু এবং কবি ও প্রাবন্ধিক কাজী নাসির মামুন।

সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। স্বাগত বক্তৃতা দেবেন বাংলা একাডেমির সচিব ড. মো. সেলিম রেজা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করবেন আবৃত্তিশিল্পী টিটো মুন্সী। নজরুলগীতি পরিবেশন করবেন শিল্পী ফেরদৌস আরা, শহীদ কবির পলাশ এবং তানভীর আলম সজীব।

এ ছাড়া রাজধানীসহ দেশব্যাপী নানা আয়োজনে জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী পালন করবে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। কবির মাজারে ফুলেল শ্রদ্ধা, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সাজানো এসব আয়োজন।

Write Your Comment

About Author Information

Bangladesh Diplomat

আওয়ামী লীগ নির্যাতনকে সাংবিধানিক ক্ষমতা মনে করতো: আসিফ নজরুল

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

Update Time : 08:58:02 am, Wednesday, 27 August 2025

আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৬ সালের এদিনে তিনি তৎকালীন পিজি হাসপাতালে (বর্তমান বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) ইন্তেকাল করেন। পরে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সমাহিত করা হয়।

স্বাধীনতাকামী কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ (২৪ মে ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দ) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে তিনি ‘দুখু মিয়া’ নামে পরিচিত ছিলেন। তার পিতা কাজী ফকির আহমেদ এবং মাতা জাহেদা খাতুন।

বাংলা সাহিত্যপ্রেমীদের কাছে তিনি বিদ্রোহী কবি হিসেবে খ্যাত হলেও তার সৃষ্টিকর্মের বিস্তার অনেক বৃহৎ। কবিতা, গান, উপন্যাস, গল্প, নাটক, প্রবন্ধ ও চলচ্চিত্রে তিনি রেখেছেন স্বতন্ত্র স্বাক্ষর। পাশাপাশি তিনি সাংবাদিক, গায়ক ও অভিনেতা হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। সংগীতে তার অসংখ্য রাগ-রাগিনী আজও অমর হয়ে আছে।

প্রেম, বিদ্রোহ, সাম্যবাদ ও জাগরণের কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার কবিতা ও গানের মাধ্যমে শোষণ ও অবিচারের বিরুদ্ধে সংগ্রামে জাতিকে প্রেরণা জুগিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তার সৃষ্টি জাতিকে উদ্বুদ্ধ করার গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে কাজ করেছে। নজরুলের সাহিত্য ও সংগীত বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণের সূচনা করেছিল। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ এবং তার রচনা জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার পর ১৯৭২ সালের ২৪ মে কবি নজরুল ইসলাম ও তার পরিবারকে ঢাকায় আনা হয় এবং তাকে জাতীয় কবির মর্যাদা দেওয়া হয়। বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক বিশেষ সমাবর্তনে তাকে সম্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রি প্রদান করে। একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি তিনি একুশে পদকে ভূষিত হন।

বাংলাদেশের জাতীয় কবির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেয়েছেন কাজী নজরুল ইসলাম। ১৯৭২ সালের ২৪ মে বাংলাদেশে আসার তারিখ থেকে তাকে ‘জাতীয় কবি’ ঘোষণা করা হয়।

জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকীর কর্মসূচি-

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান সকাল ৮টায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে মৃত্যুবার্ষিকীর কর্মসূচি। বাংলা একাডেমি কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। বিকেল ৪টায় একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ‘নজরুলের মৌলচেতনা অদ্বৈতবাদী সমন্বয়ের’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন নজরুল গবেষক অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক। আলোচনায় অংশ নেবেন নজরুল গবেষক ড. সৈয়দা মোতাহেরা বানু এবং কবি ও প্রাবন্ধিক কাজী নাসির মামুন।

সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। স্বাগত বক্তৃতা দেবেন বাংলা একাডেমির সচিব ড. মো. সেলিম রেজা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করবেন আবৃত্তিশিল্পী টিটো মুন্সী। নজরুলগীতি পরিবেশন করবেন শিল্পী ফেরদৌস আরা, শহীদ কবির পলাশ এবং তানভীর আলম সজীব।

এ ছাড়া রাজধানীসহ দেশব্যাপী নানা আয়োজনে জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী পালন করবে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। কবির মাজারে ফুলেল শ্রদ্ধা, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সাজানো এসব আয়োজন।