নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (এনসিপি)-এর মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তার দাবি, সংস্কার বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা পাওয়া গেলে আগামীকালও নির্বাচন করা সম্ভব।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে মানবাধিকার সংগঠন ‘মায়ের ডাক’ আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমাদের কাছে নির্বাচনের সময় মুখ্য নয়; সেটা ফেব্রুয়ারিতে হতে পারে, ডিসেম্বরে হতে পারে কিংবা প্রয়োজনে আগামীকালও হতে পারে—কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু নির্বাচন হওয়ার আগে সংস্কার বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত ও আইনি কাঠামো নিশ্চিত করতে হবে।”
সংস্কার নিয়ে দাবি
জাতীয় নাগরিক পার্টির এ নেতা বলেন, সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনা কীভাবে বাস্তবায়িত হবে—সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। স্পষ্ট বার্তা ছাড়া নির্বাচন মানে জাতিকে আবার অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া। তিনি সতর্ক করেন, আমরা ৯০ ও ৭১ সালের মতো ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি চাই না।
তিনি আরও বলেন, কে জিতবে আর কে হারবে—সেটা জনগণ নির্ধারণ করবে। আগে থেকেই তা ঠিক করে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
প্রতিষ্ঠান ও নেতৃত্ব প্রসঙ্গ
হাসনাত অভিযোগ করেন, রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো জনগণমুখী না হয়ে উল্টো জনগণের রোষের কারণ হয়ে উঠছে। তার মতে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে অবশ্যই সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ও নীতিমালা প্রকাশ করতে হবে।
গুম কমিশন ও নিখোঁজ ইস্যু
তিনি অভিযোগ করেন, গুম কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। রাষ্ট্রীয় এজেন্সির চাপের কারণে তারা কার্যকর হতে পারছে না।
হাসিনা পালিয়ে গেলেও আমরা মুক্ত হইনি। এখনো বহু মানুষ গুম হয়ে নিখোঁজ রয়েছেন, বলেন হাসনাত। গুমের জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনারও দাবি জানান তিনি।
গণতন্ত্র ও ভিন্নমত
গণতন্ত্রে মতপার্থক্য স্বাভাবিক উল্লেখ করে হাসনাত বলেন, দেশে ভিন্নমত দমন, ব্যক্তিগত চরিত্র হনন এবং প্রতিপক্ষকে হেয় করার প্রবণতা বেড়েছে—যা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। তিনি সতর্ক করেন, **আওয়ামী লীগকে আর ফ্যাসিবাদী চর্চার সুযোগ দেওয়া যাবে না।**
রুমিন ফারহানা প্রসঙ্গ
সাইবার বুলিংয়ের শিকার বিএনপির নেতা রুমিন ফারহানার ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে হাসনাত বলেন, রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে কোনো নারীকে নিয়ে কুৎসা রটানো অনভিপ্রেত। এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।