অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় নিহতের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫১ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী।
সোমবার (২৫ আগস্ট) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, নিহতদের মধ্যে ২৪ জন মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে প্রাণ হারান, আর অনাহার ও অপুষ্টির কারণে মারা গেছেন ৮ জন। চলমান সংঘর্ষের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত অপুষ্টি ও অভুক্ত অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে ২৮৯ জনের, যাদের মধ্যে ১১৫ জনই শিশু।
ইসরায়েলি বাহিনীর ধারাবাহিক সামরিক অভিযানে গাজার জেতুন ও সাবরা মহল্লায় ইতোমধ্যে এক হাজারেরও বেশি ভবন সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছে। ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, এসব হামলায় বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে, যাদের উদ্ধারে নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছে জরুরি টিমগুলো।
তাদের দাবি, টানা বোমা হামলা ও রাস্তাঘাট বন্ধ থাকায় অনেক এলাকায় উদ্ধারকর্মী বা ত্রাণ পৌঁছানো অসম্ভব হয়ে উঠেছে। একই সঙ্গে হাসপাতালে বেড়েছে চরম চাপ, চিকিৎসকদের পক্ষে আহতদের সামাল দেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
সিভিল ডিফেন্স আরও জানায়, গাজার কোনো এলাকাই এখন নিরাপদ নয়। ইসরায়েলি বাহিনী উত্তর থেকে দক্ষিণ পর্যন্ত ঘরবাড়ি, আশ্রয়কেন্দ্র এমনকি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রেও হামলা চালাচ্ছে। সর্বশেষ দখলদার বাহিনী ট্যাংক নিয়ে গাজা শহরের সাবরা এলাকায় ঢুকে পড়েছে, যার ফলে প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে দক্ষিণের দিকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই সহিংস অভিযানে ইসরায়েলি বাহিনী এখন পর্যন্ত ৬২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, গাজা এখন কার্যত বসবাসের অযোগ্য ও দুর্ভিক্ষপীড়িত এক ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।