দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার অংশ হিসেবে চলতি আগস্ট মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি দলের নয়াদিল্লি সফরের কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে সফরটি বাতিল করা হয়েছে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) ভারতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২৫ থেকে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত নির্ধারিত ওই সফর আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সফরটি পরে নতুন তারিখে অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে চলমান শুল্ক ইস্যু এই আলোচনায় প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে, ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। এর আগে আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল।
এমন প্রেক্ষাপটে এবারের সফরকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছিল। কারণ ২৭ আগস্ট থেকে নতুন শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে এবং সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে একটি চূড়ান্ত চুক্তি করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি চলছিল।
এনডিটিভি জানিয়েছে, নির্ধারিত সফরে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে ষষ্ঠ দফার আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
চুক্তির অন্যতম প্রধান অন্তরায় হলো ভারতীয় কৃষি ও দুগ্ধ খাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশাধিকারের চাপ। তবে ভারত স্পষ্ট করেছে, এই খাতে ছাড় দেওয়া হলে দেশের প্রান্তিক কৃষকদের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে। পাশাপাশি, দুগ্ধপণ্য আমদানিতে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বিষয়গুলোও বিবেচনায় রয়েছে।
মার্কিন শুল্ক চাপের জবাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে ‘স্বদেশি’ পণ্যের ব্যবহার ও কৃষক-জেলেদের স্বার্থ রক্ষায় জোর দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের মধ্যে সম্প্রতি আলাস্কায় একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ধারণা করা হয়েছিল, এতে কিছু ইতিবাচক অগ্রগতি হলে ভারতের ওপর শুল্ক চাপ কিছুটা কমতে পারে। তবে সেই আশায় গুড়েবালি।
মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ইতোমধ্যেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, রাশিয়া থেকে তেল আমদানি অব্যাহত থাকলে ভারতের ওপর আরও কঠোর শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। ব্লুমবার্গ টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমরা ইতোমধ্যেই সেকেন্ডারি শুল্ক আরোপ করেছি। আলোচনা ফলপ্রসূ না হলে ভবিষ্যতে আরও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”