ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় আবারও রক্ত ঝরল। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৭০ জন। একই সময়ে অনাহার ও অপুষ্টিজনিত কারণে মারা গেছেন আরও ১১ জন, যাদের মধ্যে রয়েছে এক শিশুও।
রোববার (১৭ আগস্ট) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ তথ্য জানায়।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, চলমান সংঘাতে গাজায় মোট প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬১ হাজার ৮৯৭ জনে। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৫৫ হাজার ৬৬০ জন।
গত একদিনে নিহতদের মধ্যে আটজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে। নতুন করে আহত হয়েছেন আরও ৩৮৫ জন।
এছাড়া দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ২৫১ জন, যাদের মধ্যে ১০৮ জনই শিশু।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতির চুক্তি ভঙ্গ করে ইসরায়েল ফের হামলা শুরু করে। তারপর থেকে এ পর্যন্ত ১০ হাজার ৩৬২ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ৪৩ হাজার ৬১৯ জন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, গাজায় অন্তত এক মিলিয়ন নারী ও কিশোরী চরম খাদ্য সংকটে ভুগছেন। মেডিসিন স্যাঁ ফ্রঁতিয়ের (MSF) বলছে, ত্রাণ কেন্দ্রগুলো এখন পরিণত হয়েছে ‘মৃত্যুর এলাকায়’।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, ২৭ মে থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে ১ হাজার ৭৬০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গাজার সিভিল ডিফেন্স বিভাগ জানায়, প্রতিদিন যেখানে ১ হাজার ত্রাণবাহী ট্রাক প্রয়োজন, সেখানে প্রবেশ করতে পারছে মাত্র ১০০টি। এর বেশিরভাগই চলে যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের কাছে, সাধারণ মানুষ ত্রাণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
ইউএনআরডব্লিউএ (UNRWA) জানিয়েছে, গাজায় খাবার ও পানির সন্ধানে বাইরে বের হওয়া নারীরা এখন মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়ছেন। দাতব্য সংস্থাগুলোর মতে, গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা এখন কার্যত ভেঙে পড়েছে, যা বাড়তে থাকা আহতদের চিকিৎসা দিতে সম্পূর্ণ অক্ষম।