ভারতের ছয়টি যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তান। শুধু তাই নয়, ভারতীয় সামরিক শক্তির অন্যতম ভরসা রাশিয়া নির্মিত এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও তারা ধ্বংস করেছে বলে জানিয়েছে ইসলামাবাদ। আর এই অভিযানে অংশ নেওয়া সেই সাহসী পাইলটদের এবার দেশের সর্বোচ্চ সামরিক বীরত্ব পদক দিয়েছে পাকিস্তান।
ঘটা করে পদক দেওয়ার এই আয়োজন হয় পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসের দিন, বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট)। ইয়াওয়ান-ই-সদর প্রাসাদে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতি আসিফ আলি জারদারি ও প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। সেখানেই জনসমক্ষে আনা হয় অভিযানে অংশ নেওয়া বিমান বাহিনীর সদস্যদের।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ উইং কমান্ডার মালিক রিজওয়ানুল হক-কে বিশেষভাবে সম্মান জানান, যিনি পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী ভারতীয় এস-৪০০ সিস্টেম ধ্বংসের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তাকে ‘তামঘা-ই-বাসালাত’ পদক পরিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী নিজ হাতে। মঞ্চে ডেকে পাশে দাঁড় করিয়ে শ্রোতাদের উদ্দেশে বলেন, “তিনি এস-৪০০ সিস্টেম ধ্বংস করেছেন।” তখন অনুষ্ঠানস্থল করতালিতে মুখরিত হয়ে ওঠে।
এছাড়া ‘সিতারা-ই-জুরাত’ পদক দেওয়া হয়েছে মোট সাতজন বিমান বাহিনীর কর্মকর্তাকে। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মিডিয়া শাখা আইএসপিআর নিশ্চিত করেছে এই তথ্য।
ঘটনার শুরু ২২ এপ্রিল। জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে এক ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহত হন। ভারত সরাসরি এর দায় পাকিস্তানের ওপর চাপায়। ইসলামাবাদ অবশ্য তা পুরোপুরি অস্বীকার করে।
এর জবাবে ২৩ এপ্রিল থেকে ভারত একের পর এক কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়—পাকিস্তানের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে, সিন্ধু নদ চুক্তি স্থগিত করে, সীমান্ত বন্ধ করে দেয় এবং দুই দেশের দূতাবাসেও কার্যক্রম সীমিত করে দেয়।
এর মধ্যে ৭ মে ভোরে পাকিস্তান শাসিত কাশ্মির ও পাঞ্জাবের ছয়টি শহরে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নারী-শিশুসহ বহু বেসামরিক মানুষের মৃত্যু ঘটে। একটি মসজিদও ধ্বংস হয়। এর জবাবে পাকিস্তান ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে, যার মধ্যে তিনটি ছিল ভারতের গর্ব রাফাল জেট।
এরপর শুরু হয় পাকিস্তানের ‘অপারেশন বুনিয়ানুম মারসুস’। এই অভিযানে পাকিস্তান ভারতের বিমান ঘাঁটি, ক্ষেপণাস্ত্র গুদামসহ বিভিন্ন কৌশলগত স্থাপনায় বড় ধরনের হামলা চালায়।
দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা যখন চরমে, তখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মধ্যস্থতা করে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করেন। রাতে দীর্ঘ কূটনৈতিক আলাপের পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ভারত ও পাকিস্তান। সকালে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ও ভারতের পররাষ্ট্রসচিব আলাদাভাবে সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পাকিস্তান বলছে, এই অভিযানের মধ্য দিয়ে তারা ভারতের “অপ্রতিরোধ্য সামরিক আধিপত্যের” ধারণাকে ভেঙে দিয়েছে। তবে ভারতীয় পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
বিশ্লেষকদের মতে, দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে এমন সরাসরি সংঘর্ষ ও পাল্টা পাল্টি হামলা বিরল এবং অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ঘটনা। যুদ্ধ থামলেও দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাস ও উত্তেজনা এখনো কমেনি।