আগামী সপ্তাহে লন্ডনে সফররত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের অনুরোধ জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক ।
রোববার (৮ জুন) ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান জানায়, এ বিষয়ে ড. ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন টিউলিপ।
চিঠিতে টিউলিপ সিদ্দিক লিখেছেন, বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ অভিযোগ এবং তা ঘিরে তৈরি হওয়া ‘ভুল বোঝাবুঝি’ দূর করতেই তিনি এ বৈঠক চান।
চিঠিতে টিউলিপ বলেন, ‘লন্ডনে আপনার সফরকালে যদি সাক্ষাৎ হয়, তাহলে আমার খালার (শেখ হাসিনা) সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নের বিষয়ে আমার বক্তব্য পরিষ্কার করার সুযোগ পাবো।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি লন্ডনে জন্মগ্রহণ করা একজন ব্রিটিশ নাগরিক। গত এক দশক ধরে হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেট থেকে এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। বাংলাদেশের প্রতি আবেগ থাকলেও আমি সেখানে জন্মাইনি, বাস করি না, এমনকি কোনও ব্যবসায়িক স্বার্থও নেই।’
টিউলিপ অভিযোগ করেছেন, তার আইনজীবীরা লন্ডন থেকে দুদকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোনও জবাব মেলেনি। বরং দুদক ঢাকা শহরের একটি ‘অজানা ঠিকানায়’ নথিপত্র পাঠাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এই তথাকথিত তদন্তের প্রতিটি ধাপ সংবাদমাধ্যমে ফাঁস করা হচ্ছে, অথচ আমার আইনজীবীদের সঙ্গে কোনো আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ করা হয়নি।’
চিঠিতে টিউলিপ আরও উল্লেখ করেছেন, ‘আপনি নিশ্চয়ই অনুধাবন করতে পারবেন, এসব অভিযোগ কীভাবে আমার সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব পালনে এবং দেশের প্রতি আমার অঙ্গীকারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।’
গত বছর যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী পর্যায়ের মানদণ্ড বিষয়ক উপদেষ্টা লরি ম্যাগনেস টিউলিপকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিলেও তিনি নিজে থেকেই পদত্যাগ করেন। তিনি বলেন, এই বিতর্ক লেবার পার্টি নেতা কিয়ার স্টারমারের সরকারের জন্য বিব্রতকর হয়ে উঠতে পারে।
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তার খালার (শেখ হাসিনা) শাসনামলে তিনি অবৈধ সুবিধা গ্রহণ করেছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, টিউলিপ ও তার মা প্রভাব খাটিয়ে ঢাকার একটি অভিজাত এলাকায় ৭ হাজার ২০০ বর্গফুটের একটি প্লট নিয়েছেন। যদিও
টিউলিপ ও তার আইনজীবীরা এই অভিযোগগুলো ‘ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে দাবি করেছেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান ড. ইউনূস ৯ জুন লন্ডন সফরে যাচ্ছেন। সফরে তিনি রাজা তৃতীয় চার্লসের কাছ থেকে কিং চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড-২০২৫ গ্রহণ করবেন। এছাড়া থিংক ট্যাংক চ্যাথাম হাউজে অংশগ্রহণ এবং প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকেরও কথা রয়েছে তার।
বাংলাদেশ ডিপ্লোম্যাট: এমআইজে