গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর ফাঁস হওয়া ফোনালাপে ‘আপা আপা’ বলা আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবিরকে জামিন দেননি হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিন আবেদন খারিজ করে দেন। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হেমায়েত উল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, ২০১৬ সালের এক চাঁদাবাজির মামলায় বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছিলেন। সেই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট আসেন জাহাঙ্গীর কবির। এ মামলায় তিনি ১ নম্বর আসামি।
জাহাঙ্গীর কবির বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। গত ১৪ আগস্ট ভোরে বরগুনায় নিজ বাসভবন আমতলার বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার পর তার সঙ্গে ফোনে কথা বলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের দিন বরগুনা সদর থানার ওসি একেএম মিজানুর রহমান জানিয়েছিলেন, ঢাকা থেকে পুলিশের একটি টিম এসে তাকে গ্রেপ্তার করে। ধারণা করা হচ্ছে, শেখ হাসিনার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলার পর বিশৃঙ্খলা ও ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাহাঙ্গীর কবিরের ফোনে কথোপকথন ভাইরাল হওয়ায় রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় ৯ অক্টোবর আদালতে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
১২ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন আওয়ামী লীগের এই নেতা। তিন মিনিটের ফোনালাপে শেখ হাসিনা জাহাঙ্গীর কবীরকে বলেন, আপনারা শৃঙ্খলা মেনে দলীয় কার্যক্রম চালাবেন। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসকে যথাযথভাবে পালন করবেন। মো. জাহাঙ্গীর কবীর শেখ হাসিনাকে বলেন, আপা আপনি ঘাবড়াবেন না। (মনোবল হারাবেন না)। আপনি ঘাবড়ালে আমরা দুর্বল হয়ে যাই। আমরা শক্ত আছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি ঘাবড়াবো কেন। আমি ভয় পাইনি। আপনারা দেখছেন, আমাদের পুলিশ বাহিনীকে মেরে কীভাবে ঝুলিয়ে রেখেছে। আমাদের কর্মীদের মেরেছে। বোরকা পরে মেরেছে। এ দেশটা রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছে। আপনারা যেভাবে আছেন থাকেন।
এদিকে জাহাঙ্গীর কবিরের বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা রয়েছে। সেসব মামলায় তিনি বরগুনা জেলহাজতে রয়েছেন। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হেমায়েত উল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, এ আসামি আইনের ৬০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পর হাইকোর্টে জামিন চেয়েছিলেন। তা যথাযথ না হওয়ায় তাকে জামিন দেননি হাইকোর্ট।