মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও কলামিস্ট ডা. পিনাকী ভট্টাচার্য বলেছেন, ছাত্র-জনতার জুলাই বিপ্লবকে কোনোভাবেই বেহাত হতে দেওয়া যাবে না। এটার প্রথম শর্তই হবে পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের বাংলাদেশের মাটিতে রাজনীতি করার সুযোগ ও তাদের পুনর্বাসন চিরদিনের জন্য বন্ধ করা।
তিনি বলেন, ভারতের আধিপত্য নিশ্চিহ্ন করতে হবে এবং সমাজে ইনসাফ ও সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাহলেই কেবল বিপ্লব-পরবর্তী সফলতা আসবে।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনের নরেব্রোহেলেনে জুলাই রেভ্যুলুশন ইউনিট ডেনমার্কের উদ্যাগে আয়োজিত পলিসি ডায়ালগে প্রধান অতিথির আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে দুপুরে দেশীয় বিভিন্ন খাবারের আয়োজন ফুড ফ্যাস্টিভ্যাল, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এতে ডেনমার্কে অবস্থানরত বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ড. আহসানুল হক আরিফ ও রাশিদ মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ পলিসি ডায়ালগে বিশেষ অতিথি ছিলেন সুইডেনের ব্লেকিং ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (বিটিএইচ) অধ্যাপক ড. শহিদুজ্জামান কোরেশী ও ড. রিয়াজ উদ্দিন।
জুলাই রেভ্যুলুশন ইউনিট ডেনমার্কের সমন্বয়ক শামসুল ইসলাম চৌধুরী ও জিয়াউল হকের সঞ্চালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য দেন সমন্বয়ক মো. মুহিবুর রহমান। শিক্ষার্থী ও সিনিয়রদেরও অনেকে এতে বক্তব্য দেন। এছাড়া প্রশ্নোত্তোর পর্বে প্রবাসীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ডা. পিনাকী ভট্টাচার্যসহ অন্য অতিথিরা।
আলোচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলকে নিয়ে চলমান বিতর্ক প্রসঙ্গে পিনাকী ভট্টাচার্য বলেন, তার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কোনো বৈরিতা নেই, অপছন্দ নেই। এই বিতর্কের মধ্যেই সম্প্রতি আসিফ নজরুল তাকে ফোন করেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক কথা হয়েছে তার সঙ্গে। তবে শুধু আসিফ নজরুল না, এই সরকারের ২/৩ জন ছাড়া বেশিরভাগেরই এতো বড় পরিসরে কাজ করার বা রাষ্ট্র পরিচালনার কোনো অভিজ্ঞতা নেই। যার কারণে সুফল আসছে না। তাদের ব্যর্থতা রয়েছে। এটা মূলত কোনো বিপ্লবোত্তর একটা সরকার হয়নি। এটাকে তারা একটা চাকরি হিসেবে নিয়েছে। আগের শাহাবুদ্দিন বা লতিফুর রহমানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতোই একটা সরকার হয়েছে।
সম্প্রতি তিন উপদেষ্টা মিলে সিনেমা দেখতে যাওয়ার ঘটনার কঠোর সমালোচনা করে পিনাকী ভট্টাচার্য বলেন, তারা এখন পর্যন্ত জুলাই বিপ্লবের কোনো শহীদের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের খোঁজখবর নিতে পারল না, অথচ তিন উপদেষ্টা মিলে আরেক উপদেষ্টা ফারুকীর (মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী) সিনেমা দেখতে গেল। এটা আমাদের জন্য লজ্জার। অথচ তাদের লজ্জা হয় না। এরা বোঝেই না কোন রক্ত মাড়িয়ে তারা ক্ষমতায় এসেছে।
দেশের রাজনীতিতে প্রবেশ বা কোনো নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের পরিকল্পনা আছে কিনা দর্শকের এমন প্রশ্নের জবাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের জনপ্রিয় এই আলোচক বলেন, আপাতত কোনো রাজনৈতিক দল গঠনের পরিকল্পনা নেই। যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল গঠন বা নেতা হলে তো তখন আমি শুধু একটা ক্ষুদ্র গোষ্ঠী বা পক্ষের হয়ে কথা বলতে পারবে। কিন্তু এখন তো আমি সব পক্ষের হয়ে কথা বলতে পারছি এবং সমাজের ভালো কিছুর পক্ষে ও খারাপের বিপক্ষে জোরালো ভূমিকা রাখতে পারছি। রাজনীতিতে প্রবেশ করলে তো এতেটা বৃহৎ পরিসরে ভূমিকা রাখার সুযাগে থাকবে না।