ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার ফলে গাজায় নিহতের মোট সংখ্যা ৪৩ হাজার ৭৫০ ছাড়িয়ে গেছে। এ হামলায় ১২০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন এবং অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন, যাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
বার্তাসংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে শুরু হওয়া এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৩ হাজার ৭৬৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে এবং অন্তত ১ লাখ ৩ হাজার ৪৯০ জন আহত হয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিহতের মধ্যে বেশিরভাগই অসামরিক নাগরিক, যারা ঘরবাড়ি হারিয়ে মানবিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছেন।
ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার কারণে গাজায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি হয়েছে। বহু বিল্ডিং ধ্বংস হয়ে যাওয়ার ফলে হাজার হাজার মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়েছেন এবং বেশ কিছু স্থানে উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়াদের খুঁজে বের করতে পারছেন না। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গাজা উপত্যকার বিভিন্ন অঞ্চলে আরও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছে এবং তাদের অবস্থান এখনও অজানা।
এদিকে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু ইসরায়েল তা অগ্রাহ্য করে তাদের আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোও ইসরায়েলের এই নৃশংস হামলার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে, তবে গাজার পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত আরও খারাপ হয়ে উঠছে।
গাজার হাসপাতালগুলোও রোগী ও আহত মানুষের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। অনেক হাসপাতালে প্রয়োজনীয় ওষুধ, চিকিৎসক এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো সংকট দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি, মানবিক সাহায্য পৌঁছানোর পথেও বাধা তৈরি হয়েছে, কারণ ইসরায়েলি বাহিনী গাজা সীমান্তে অবরোধ সৃষ্টি করে রেখেছে।
এই পরিস্থিতিতে গাজা উপত্যকায় বসবাসরত মানুষগুলো জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছে। তাদের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে আরও কার্যকর মানবিক সাহায্য এবং যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা এখন বেশি।