স্পেনের পূর্বাঞ্চলীয় ভ্যালেন্সিয়া অঞ্চলে টানা বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় অন্তত ৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার ভ্যালেন্সিয়ার পূর্বাঞ্চলের জরুরি সেবা বিভাগ জানায়, স্পেনের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যায় বাড়িঘর-গাড়ি ভেসে গিয়েছে। রাস্তাঘাট-রেলপথ ডুবে গিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে।
উদ্ধার তৎপরতা সমন্বয়ের জন্য একটি ক্রাইসিস কমিটি গঠন করেছে স্পেনের কেন্দ্রীয় সরকার।
পুলিশ ও উদ্ধারকারী বাহিনী হেলিকপ্টার ব্যবহার করে বন্যাদুর্গত অঞ্চলের বাসিন্দাদের উদ্ধার করে নিরাপদ এলাকায় নিয়ে যেতে কাজ করছে। এছাড়াও বন্যাবিধ্বস্ত এলাকায় স্পেনের জরুরি রেসপন্স ইউনিটের এক হাজারের বেশি সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
ভ্যালেন্সিয়ার উটিয়েল শহরের মেয়র রিকার্ডো গ্যাবালদোন জাতীয় সম্প্রচারমাধ্যম আরটিভিইকে বলেন, ‘গতকাল ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ দিন। আমরা ইঁদুরের মতো আটকা পড়েছিলাম। রাস্তায় গাড়ি ও আবর্জনার কন্টেইনার ভেসে আসছিল। পানি তিন মিটার পর্যন্ত উঠে গেছে।’
উটিয়েল শহরের বেশ কয়েকজন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানান মেয়র।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখনো অনেকে নিখোঁজ থাকায় মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ায় অনেক এলাকায় হতাহতের খবর এখনো পাওয়া যায়নি। দুর্গম এলাকাগুলোতে উদ্ধার কাজ চলছে।
কাস্তিলা লা মাঞ্চা অঞ্চলের লেতুর গ্রামের মেয়র সার্জিও মারিন সানচেজ জানিয়েছেন, তার গ্রামে ছয়জন নিখোঁজ রয়েছেন।
আকস্মিক বন্যায় মালাগার কাছে প্রায় ৩০০ যাত্রী নিয়ে একটি দ্রুতগামী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ভ্যালেন্সিয়া শহর এবং মাদ্রিদের মধ্যে উচ্চ গতির ট্রেন পরিষেবা বাধাগ্রস্ত হয়।
উপড়ে পড়া গাছ ও বিধ্বস্ত যানবাহনের কারণে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় উদ্ধার কাজ সহজ করার জন্য লোকজনকে বাড়িতে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ভ্যালেন্সিয়ার আঞ্চলিক প্রেসিডেন্ট কার্লোস মাজন।
ভ্যালেন্সিয়ার ব্যারিও দে লা টোরে গ্রামের পানশালার মালিক ক্রিশ্চিয়ান ভিয়েনা ফোনে বলেন, ‘আশপাশের এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে। প্রায় ৩০ সেন্টিমিটার গভীর কাদায় ডুবে গেছে সব। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়ে গেছে সবকিছু।’
বুধবার সকালে ভ্যালেন্সিয়ায় বৃষ্টি কমে গেলেও স্পেনের জাতীয় আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে বৃহস্পতিবার আরো ঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
সূত্র : ইউএনবি