8:01 pm, Sunday, 22 December 2024

পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন কমিটির বিতর্কিত ৩ সদস্য প্রত্যাহার

  • Zuel Rana
  • Update Time : 09:57:23 am, Friday, 18 October 2024
  • 83
Monzu-Info-Tech
Monzu-Info-Tech

পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন বিতর্কিত তিন সদস্য। পতিত আওয়ামী লীগের প্রবর্তিত বিতর্কিত কারিকুলাম পরিমার্জন করে নতুন শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবই মুদ্রণের আগে গঠন করা হয়েছে এই পরিমার্জন কমিটি। কিন্তু বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে এই কমিটি গঠনের পর থেকেই দীর্ঘ আলোচনা-সমালোচনা আর তীব্র বিরোধিতাও শুরু হয়। সম্প্রতি পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জনের এই কমিটি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে বিতর্কিত তিনজনকে। সূত্র জানায় দেশের আলেম সমাজ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিতর্কিত তিন সদস্যকে কমিটি থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন কাজে তাদের আর ডাকা হচ্ছে না।

এ দিকে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) একটি সূত্র জানিয়েছে বিভিন্ন মহল থেকে বেশ কয়েকজন ব্যক্তির বিষয়ে তীব্র আপত্তি আসায় তাদের পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন কমিটি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন কাজের সমন্বয় বা তদারকি করতে ১০ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেখানেও বিতর্কিত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে শুরু থেকেই সমালোচনার ঝড় বইতে থাকে। পরে বাধ্য হয়েই সরকার মাত্র ১৩ দিনের ব্যবধানে ২৮ সেপ্টেম্বর সেই পুরো কমিটি বাতিল ঘোষণা করে। কিন্তু সমন্বয় কমিটি বাতিল করা হলেও প্রকৃত পক্ষে যারা পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জনের কাজে সরাসরি জড়িত তাদের সেই পূর্ণ কমিটি বহাল রাখা হয়। এ নিয়েও আবারো তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। বিষয়ভিত্তিক ও শ্রেণী ওয়ারি বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের ওই কমিটিতে না রাখা নিয়েও প্রতিবাদ আসে।

সূত্র জানায় পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জনের মূল দায়িত্বে থাকা ওই কমিটিতে মোট সদস্য ছিলেন ৪১ জন। এর মধ্যে বাংলা বিষয়ের পরিমার্জনের জন্য পাঁচজন, ইংরেজির জন্য চারজন, গণিত ও উচ্চতর গণিতের জন্য পাঁচজন, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞানের জন্য পাঁচজন, পদার্থ বিজ্ঞানের জন্য পাঁচজন, জীববিজ্ঞানের জন্য পাঁচজন, রসায়নের জন্য চারজন আইসিটির জন্য পাঁচজন এবং ইসলাম ধর্মের জন্য তিনজন।

কিন্তু এই কমিটির বেশ কয়েকজনকে নিয়ে আপত্তি থাকায় তাদের মধ্যে থেকে তিনজনকে বাদ দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, পদার্থ এবং ইসলাম ধর্ম বিষয়ের একজন করে তিনজন সদস্য তাদের ব্যক্তিগত চিন্তাচেতনা বিশ্বাস এবং আদর্শের কারণে বাদ পরেছেন।

পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন কমিটি থেকে বাদ পড়া তিনজনের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ না করা হলেও তাদের এখন আর কোনো কাজেই আর ডাকা হচ্ছে না। বাদ পড়া সদস্যরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সামিনা লুৎফা নিত্রা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন এবং কুরআন একাডেমি ফাউন্ডেশনের (কাফ) চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খান। এদের মধ্যে প্রথম দু’জনের বিরুদ্ধে ট্রান্সজেন্ডার এবং সমকামিতার সমর্থনের অভিযোগ রয়েছে।

আর আবু সাঈদের বিরুদ্ধে রাসূল সা:-এর সুন্নাহ অর্থাৎ হাদিস অস্বীকারকারী হিসেবে আলেম সমাজের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। একই সাথে আবু সাঈদ খান নিজে ইংরেজি সাহিত্যে পড়াশোনা করলেও তিনি দায়িত্বে ছিলেন ইমলাম ধর্ম বই পরিমার্জনের। বিষয়টি নিয়ে দেশের হক্কানি আলেম সমাজ এবং বিভিন্ন ইসলামী রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও তীব্র আপত্তি ছিল।

এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা জনগণের সেন্টিমেটকে কখনোই অগ্রাহ্য করতে পারি না। পাঠ্যপুস্তক বা কারিকুলাম নিঃসন্দেহে একটি স্পর্শকাতর বিষয়। এখানে বিতর্কিত কোনো বিষয় বা বিতর্কিত কোনো ব্যক্তিদের সম্পৃক্ত করতে চাই না। যেহেতু শুরুর দিকে যেকোনোভাবে হোক বিতর্কিত কয়েকজন ব্যক্তি এই কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন আমরা এখন তাদের বইয়ের পরিমার্জনের কাজে আর ডাকছি না। বিভিন্ন ব্যক্তি কিংবা পক্ষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই আমরা কয়েকজনকে পরিমার্জন কমিটি থেকে বাদ দিয়েছি।

বিডি/জেডআর

 

Write Your Comment

About Author Information

Zuel Rana

কনক্রিট হল ব্লক- বাড়ির শক্ত ভিতের জন্য সেরা পছন্দ

পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন কমিটির বিতর্কিত ৩ সদস্য প্রত্যাহার

Update Time : 09:57:23 am, Friday, 18 October 2024

পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন বিতর্কিত তিন সদস্য। পতিত আওয়ামী লীগের প্রবর্তিত বিতর্কিত কারিকুলাম পরিমার্জন করে নতুন শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবই মুদ্রণের আগে গঠন করা হয়েছে এই পরিমার্জন কমিটি। কিন্তু বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে এই কমিটি গঠনের পর থেকেই দীর্ঘ আলোচনা-সমালোচনা আর তীব্র বিরোধিতাও শুরু হয়। সম্প্রতি পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জনের এই কমিটি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে বিতর্কিত তিনজনকে। সূত্র জানায় দেশের আলেম সমাজ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিতর্কিত তিন সদস্যকে কমিটি থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন কাজে তাদের আর ডাকা হচ্ছে না।

এ দিকে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) একটি সূত্র জানিয়েছে বিভিন্ন মহল থেকে বেশ কয়েকজন ব্যক্তির বিষয়ে তীব্র আপত্তি আসায় তাদের পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন কমিটি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন কাজের সমন্বয় বা তদারকি করতে ১০ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেখানেও বিতর্কিত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে শুরু থেকেই সমালোচনার ঝড় বইতে থাকে। পরে বাধ্য হয়েই সরকার মাত্র ১৩ দিনের ব্যবধানে ২৮ সেপ্টেম্বর সেই পুরো কমিটি বাতিল ঘোষণা করে। কিন্তু সমন্বয় কমিটি বাতিল করা হলেও প্রকৃত পক্ষে যারা পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জনের কাজে সরাসরি জড়িত তাদের সেই পূর্ণ কমিটি বহাল রাখা হয়। এ নিয়েও আবারো তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। বিষয়ভিত্তিক ও শ্রেণী ওয়ারি বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের ওই কমিটিতে না রাখা নিয়েও প্রতিবাদ আসে।

সূত্র জানায় পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জনের মূল দায়িত্বে থাকা ওই কমিটিতে মোট সদস্য ছিলেন ৪১ জন। এর মধ্যে বাংলা বিষয়ের পরিমার্জনের জন্য পাঁচজন, ইংরেজির জন্য চারজন, গণিত ও উচ্চতর গণিতের জন্য পাঁচজন, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞানের জন্য পাঁচজন, পদার্থ বিজ্ঞানের জন্য পাঁচজন, জীববিজ্ঞানের জন্য পাঁচজন, রসায়নের জন্য চারজন আইসিটির জন্য পাঁচজন এবং ইসলাম ধর্মের জন্য তিনজন।

কিন্তু এই কমিটির বেশ কয়েকজনকে নিয়ে আপত্তি থাকায় তাদের মধ্যে থেকে তিনজনকে বাদ দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, পদার্থ এবং ইসলাম ধর্ম বিষয়ের একজন করে তিনজন সদস্য তাদের ব্যক্তিগত চিন্তাচেতনা বিশ্বাস এবং আদর্শের কারণে বাদ পরেছেন।

পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন কমিটি থেকে বাদ পড়া তিনজনের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ না করা হলেও তাদের এখন আর কোনো কাজেই আর ডাকা হচ্ছে না। বাদ পড়া সদস্যরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সামিনা লুৎফা নিত্রা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন এবং কুরআন একাডেমি ফাউন্ডেশনের (কাফ) চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খান। এদের মধ্যে প্রথম দু’জনের বিরুদ্ধে ট্রান্সজেন্ডার এবং সমকামিতার সমর্থনের অভিযোগ রয়েছে।

আর আবু সাঈদের বিরুদ্ধে রাসূল সা:-এর সুন্নাহ অর্থাৎ হাদিস অস্বীকারকারী হিসেবে আলেম সমাজের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। একই সাথে আবু সাঈদ খান নিজে ইংরেজি সাহিত্যে পড়াশোনা করলেও তিনি দায়িত্বে ছিলেন ইমলাম ধর্ম বই পরিমার্জনের। বিষয়টি নিয়ে দেশের হক্কানি আলেম সমাজ এবং বিভিন্ন ইসলামী রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও তীব্র আপত্তি ছিল।

এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা জনগণের সেন্টিমেটকে কখনোই অগ্রাহ্য করতে পারি না। পাঠ্যপুস্তক বা কারিকুলাম নিঃসন্দেহে একটি স্পর্শকাতর বিষয়। এখানে বিতর্কিত কোনো বিষয় বা বিতর্কিত কোনো ব্যক্তিদের সম্পৃক্ত করতে চাই না। যেহেতু শুরুর দিকে যেকোনোভাবে হোক বিতর্কিত কয়েকজন ব্যক্তি এই কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন আমরা এখন তাদের বইয়ের পরিমার্জনের কাজে আর ডাকছি না। বিভিন্ন ব্যক্তি কিংবা পক্ষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই আমরা কয়েকজনকে পরিমার্জন কমিটি থেকে বাদ দিয়েছি।

বিডি/জেডআর