গুঞ্জনই সত্যি হলো। আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে অবশেষে প্রধান কোচের পদ থেকে চান্ডিকা হাথুরুসিংহকে বরখাস্ত করলো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তার অনুপস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে ক্যারিবীয় ফিল সিমন্সকে।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেটে স্টেডিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলন করে হাথুরুসিংহেকে সাময়িক বরখাস্ত করার বিষয়টি জানান বিসিবি সভাপতি ফারুক।
বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ জানিয়েছেন, আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগে আপাতত শোকজ ও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার জায়গায় আপাতত ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফিল সিমন্সকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বোর্ড সভাপতি বলেছেন, পরবর্তীতে হাথুরুসিংহেকে ছাঁটাই করা হবে।
বিসিসির নতুন প্রধান হয়েই জানিয়ে দিয়েছিলেন ফারুক আহমেদ, কোচিংয়ে পরিবর্তন আনবেন তিনি। বোর্ডের বাইরে থাকার সময়ই ছেলেদের জাতীয় দলের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে নিয়ে অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছিলেন।
দায়িত্ব পেয়েও অবস্থান বদলাননি, প্রথম সংবাদ সম্মেলনেই বলেছিলেন বিকল্প পেলেই কোচিংয়ে পরিবর্তন আনবেন। কিন্তু এরপরই পাকিস্তানে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। মাত্র দ্বিতীয় দল হিসেবে পাকিস্তানকে পাকিস্তানের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ করা কোচকে ছাঁটাই করা কঠিন।
তবে ভারত সফরে ভয়ংকর সময় কাটিয়েছে বাংলাদেশ দল। টেস্টে বাজেভাবে হেরেছে দুই টেস্টেই। টি-টোয়েন্টিতে পারফরম্যান্স আরও খারাপ ছিল। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অনেক সদস্যকে খেলায়নি ভারত। প্রায় দ্বিতীয় শক্তির এক দলের কাছে প্রতি ম্যাচেই অপদস্থ হয়েছে। শেষ ম্যাচে তো ২০ ওভারে ২৯৭ রান দিয়ে লজ্জার সব রেকর্ড গড়েছেন নাজমুল হোসেন শান্তরা।
পরশু ভারত সফর শেষে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ। দলের সঙ্গে ফিরেছেন হাথুরুসিংহেও। আজ একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বাংলাদেশ দলের কোচের পদ থেকে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তাকে সরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে বিসিবি। বিসিবির একটি সূত্রের বরাতে বলা হয়েছে ২১ অক্টোবর শুরু হতে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের আগেই ছাঁটাই হতে পারেন তিনি।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত হাথুরুসিংহের মেয়াদ। কিন্তু ফারুক আহমেদ বিসিবির দায়িত্ব নেওয়ার পরই আভাস দিয়েছেন, তাঁকে আগেই সরিয়ে দেয়া হবে। প্রকাশিত সংবাদে দাবি করা হয়েছিল, অসদাচরণ ও আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগেই শ্রীলঙ্কান কোচকে বিদায় করে দিচ্ছে বিসিবি।
২০২৩ বিশ্বকাপে জাতীয় দলের এক ক্রিকেটারের সঙ্গে অসদাচরণ অভিযোগ ছিল হাথুরুসিংহের বিপক্ষে। বোর্ড সভাপতি বলেছেন, এটাও ভূমিকা রেখেছে শোকজ করার পেছনে। বলা হচ্ছে চুক্তি অনুযায়ী হাথুরুসিংহের বছরে যে কদিন ছুটি পাওনা, তিনি এর চেয়ে বেশি ছুটি কাটিয়ে ফেলেছেন। চুক্তি অনুযায়ী বছরে ৪৫ দিন ছুটি পাওনা তাঁর, প্রথম বছরে তিনি অতিরিক্ত ছুটি কাটিয়েছেন ৬৭ দিন!
এ বছরও এখন পর্যন্ত অতিরিক্ত ১৪ দিন ছুটি কাটিয়েছেন। এসব ছুটি আনুষ্ঠানিকভাবে নেননি বলে বিসিবি বিষয়টাকে আচরণবিধি ভঙ্গ হিসেবে দেখছে।
পাকিস্তান সফরের আগে ছুটিতে ছিলেন হাথুরুসিংহে। এ সময় স্থানীয় কোচদের অধীনে অনুশীলন করেছিলেন ক্রিকেটাররা। পাকিস্তান সফরের শেষেও ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন কোচ। এবার দুই সিরিজের মাঝে বিরতি কম থাকায় আর ছুটিতে যাননি। কিন্তু ছুটিটা একদম পাকাপাকিভাবেই পেয়ে গেলেন।