নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার রূপসীতে গাজী গ্রুপের টায়ার তৈরির কারখানায় লুটপাটের পর আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল রোববার রাত ৯টার দিকে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে বলে জানান কারখানার সহকারী মহাব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম।
আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট রাত থেকে কাজ করলেও আজ সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
কারখানার কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামের ভাষ্য, গতকাল বিকেলের পর দুটি গ্রুপে কয়েক শ লোক কারখানায় ঢুকে পড়েন। তাঁদের বাধা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না। লুটপাটের পর রাত ৯টার দিকে কারখানাটির একাধিক ভবনে আগুন লাগিয়ে দেয় লুটপাটকারীরা।
হামলার ঘটনার পর পুলিশের কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ তাঁর। তিনি বলেন, ‘লুটপাট শুরুর পর থানাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন জায়গায় জানিয়েছি। পুলিশ আসেনি। পরে সেনাবাহিনীর একটি দল কারখানার ফটকের সামনে আসে। কিন্তু ১০ মিনিটের বেশি তাঁরা দাঁড়াননি। রাতে আগুন দেওয়ার পর ফায়ার সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আসে।’
কারখানাটিতে টায়ার প্রস্তুতের জন্য প্রচুর প্লাস্টিকজাতীয় কাঁচামাল ও দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ঢাকা বিভাগের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেজাউল করিম বলেন, ‘খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস রাত ১১টা ৪০ মিনিটে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। কারখানায় টায়ার, টায়ার তৈরির কাঁচামাল রাবার, প্লাস্টিকজাতীয় দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন দ্রুত পুরো কারখানায় ছড়িয়ে পড়ে। আমাদের ১২টি ইউনিট কাজ করছে। ভবনে আটকে পড়া ১৪ জনকে আমরা উদ্ধার করতে পেরেছি। তাঁরা এই কারখানার কর্মী নন, মূলত কারখানাটির মালামাল সরিয়ে নিতে তাঁরা এসেছিলেন। আরও কেউ ভবনে আছেন কি না, তা আগুন নেভানোর আগে বলা যাচ্ছে না।’
ঘটনার কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী গণমাধ্যমকে বলেন, দুর্বৃত্তরা ছয়তলা একটি ভবনে লুটপাট করছিল। এ সময় ভবনটির নিচতলায় আগুন দেওয়া হয়। তখন কয়েকজন ভবনটির ওপরে ছিলেন। তাঁরা বের হতে পেরেছেন কি না, সেটা তাঁরা জানাতে পারেননি।
গাজী গ্রুপের মালিক গোলাম দস্তগীর গাজী। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী ও নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। গতকাল ভোররাতে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন তিনি। এর আগে ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গাজী গ্রুপের রূপসী ও কর্ণগোপের দুটি কারখানায় হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।