ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় ফিলিস্তিনের গাজায় নিহত ৯ হাজার ছাড়িয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরু হয়। গত ২৬ দিনে এ হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৬১। এ ছাড়া ৩২ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শিশুর সংখ্যা ৩ হাজার ৭৬০ আর নারী ২ হাজার ৩২৬ জন।
আরও পড়ুন
১৫ বছরে ছয়বার যুদ্ধের কবলে গাজাবাসী
বার্তা সংস্থা এএফপি চিকিৎসাসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বডার্সের (এমএসএফ) বরাতে জানায়, বিদেশি পাসপোর্টধারীদের গাজা থেকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে। এ ছাড়া মারাত্মক আহত ব্যক্তিদের সীমান্ত পার করে মিসরে নেওয়া হচ্ছে। রাফাহ ক্রসিং পেরিয়ে ৪০০ বিদেশি গাজা ছেড়েছেন।
মিসর বলেছে, তারা সাত হাজার বিদেশিকে সরিয়ে নেবে। এদিকে গাজায় এখনো ২০ হাজারের বেশি আহত মানুষ আটকে রয়েছেন। অবরোধের কারণে এসব মানুষ ঠিকমতো স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন না।
এমএসএফের পক্ষ থেকে আহত মানুষজনকে সরিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি যুদ্ধবিরতি এবং আরও গুরুত্বপূর্ণ সহায়তার অনুমতি দেওয়ার জন্য আহ্বান করা হয়।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সদস্যদের হামলার পর থেকে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। জাতিসংঘ ও সাহায্যদাতা গোষ্ঠীগুলো গাজার অভ্যন্তরে বিপর্যয়কর মানবিক পরিস্থিতির বিষয়ে সতর্ক করেছে। জাতিসংঘ বলেছে, ২৪ লাখ মানুষের বাসস্থান গাজায় পানি, জ্বালানি ও ওষুধের তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য কাজ করা জাতিসংঘের সাহায্য সংস্থার প্রধান ফিলিপ্পে লাজ্জারিনি গত বুধবার রাফাহ সীমান্ত অতিক্রম করে গাজায় ঢোকেন। তিনি বলেন, ‘সেখানে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তা তিনি আগে কখনো দেখেননি। লাজ্জারিনি বলেন, সেখানে সবাই খাবার আর পানি চাইছিল তা দেখে আমি খুবই ধাক্কা খেয়েছি।’
আরও পড়ুন
যুদ্ধ আলাদা করল গাজার নবদম্পতিকে
শরণার্থীশিবিরে হামলা
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় জাবালিয়া শরণার্থীশিবিরে পরপর দুই দিনে ইসরায়েলের চালানো বোমা হামলায় অন্তত ১৯৫ জন নিহত হয়েছেন। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ১২০ জন।
গাজা উপত্যকা সরকারের গণমাধ্যম শাখার তথ্যানুযায়ী, গত মঙ্গল ও বুধবার চালানো ওই হামলায় আহত হয়েছেন ৭৭৭ ফিলিস্তিনি।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস জাবালিয়ায় শরণার্থীশিবিরে চালানো এ হামলাকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন। আর জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার বলেছেন, এসব ‘নির্বিচার হামলা যুদ্ধাপরাধের শামিল’।