মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রিডিয়েন্ট (এপিআই) বা ওষুধ শিল্পপার্ক স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছিল ২০০৮ সালে। দেশে ওষুধের কাঁচামাল উৎপাদনের লক্ষ্যে এ শিল্পপার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। তবে কাজ এগোচ্ছিল না। কয়েক দফায় সময় ও বরাদ্দ বাড়ানোর পর অবশেষে ২০১৮ সালের নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি উদ্বোধন করেন। কিন্তু গ্যাস–সংযোগের অভাবে উদ্বোধনের পাঁচ বছরেও ওষুধ শিল্পপার্কটি চালু হয়নি।
এপিআই শিল্পপার্কে মোট ২৭টি ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানকে জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কারখানা স্থাপন করেছে মাত্র চারটি প্রতিষ্ঠান। তবে তাদের কেউই এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে উৎপাদন শুরু করতে পারেনি। আর বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্লটও এখনো ফাঁকা পড়ে আছে।
ওষুধশিল্পের মালিকেরা বলছেন, শিল্পপার্কটি স্থাপনেই লেগেছে এক যুগের বেশি সময়। এখন সেটির অবকাঠামো নির্মাণ শেষ হলেও গ্যাস–সংযোগের কাজ ঝুলে আছে। এ কারণে সেখানে এখনো শিল্প স্থাপন করা যাচ্ছে না। আর বর্তমানে ডলার–সংকটে তৈরি হওয়া বাড়তি চাপের কারণে নতুন বিনিয়োগেও আগ্রহ কমে গেছে।
বাংলাদেশে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণে ওষুধ উৎপাদিত হলেও এর কাঁচামাল তৈরি হয় না। ওষুধের অ্যাকটিভ বা সক্রিয় উপাদান বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এই আমদানিনির্ভরতা কমাতে সরকার গজারিয়ায় ২০০ একর জমিতে অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রিডিয়েন্ট (এপিআই) নামে এই শিল্পপার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিকের)। প্রকল্পটি ২০০৮ সালে শুরু হয়ে ২০১০ সালের মধ্যেই বাস্তবায়নের কথা ছিল। কিন্তু এর পরে চার দফায় বাড়ানো হয় সময় ও অর্থ বরাদ্দ।
এপিআই শিল্পপার্কের মূল প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ২১৩ কোটি টাকা। শেষ পর্যন্ত তা বাড়িয়ে ৩৮১ কোটি টাকা করা হয়। প্রকল্পের মেয়াদও চার দফায় বাড়ানো হয়েছে। আর ২০১৮ সালের নভেম্বরে জাতীয় নির্বাচনের আগে এপিআই শিল্পপার্কের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পের কাজ শেষ হয় ২০২১ সালের জুনে।
গ্যাস–সংযোগের জন্য বেশ কয়েক বছর আগে তাদের (তিতাস) টাকা দিয়েছি। কিন্তু এখনো তারা কেন সংযোগ দিতে পারল না, তাদের সমস্যা কী, তা তো আমরা বলতে পারছি না। এ নিয়ে আমরা তিতাসকে বলেই যাচ্ছি; তিতাসও আমাদের আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে।
মুহ. মাহবুবর রহমান, চেয়ারম্যান, বিসিক
এখন পর্যন্ত কী অগ্রগতি
সম্প্রতি সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, গজারিয়ার ওষুধ শিল্পপার্কে মাটি ভরাট; সীমানাপ্রাচীর, দ্বিতল অফিস ভবন ও অভ্যন্তরীণ সড়ক নির্মাণ; অগ্নিনির্বাপণ–ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ–সংযোগ ও পানি সরবরাহের লাইন স্থাপন এবং ড্রেন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে।