গত ২৮ অক্টোবর ঢাকা কার্যত সমাবেশের নগরে পরিণত হয়েছিল। সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বিএনপির মহাসমাবেশ, একই দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন থাকা আরও ৩৫টি দল এবং জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশ।
এর পাল্টায় আওয়ামী লীগের ‘শান্তি সমাবেশ’। নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে ও বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরত্বে প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি সমাবেশস্থল হলেও তার আবহ ছিল ঢাকাজুড়ে।
বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে দলটির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ পুরোনো সহিংসতা, অনিশ্চয়তা ও পুলিশি দমন-পীড়নের মধ্যে ঢুকে পড়বে, সেটা অবধারিতই ছিল।
এখন আমজনতার মূল ভাবনা, রাস্তায় জীবনের নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক সংকট ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির বাজারে নতুন যে অনিশ্চয়তা তৈরি হলো, তা থেকে নিজেকে কীভাবে টিকিয়ে রাখবে সেটা। রাজনৈতিক ও বিদ্বৎসমাজে মূল আলোচনা অবশ্য রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও সংঘাত নিয়ে।
আরও পড়ুন
শিশুর জন্য বাবার লাশ এ কেমন ‘উপহার’
দল, রাজনৈতিক চিন্তা কিংবা মতাদর্শিক অবস্থাভেদে একেকজনের মতের ভিন্নতা থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ২৮ অক্টোবর ঢাকার রাজপথে যাঁরা প্রত্যক্ষদর্শী, তাঁদের কারও কাছে একটা বিষয়ে দ্বিমত থাকার কোনো সুযোগ নেই যে সেদিন দুই দলের ভাষ্য অনুযায়ী তাদের রাজপথ দখলের লড়াইটা ছিল কতটা অসম।
বিএনপি বেশ কয়েক দিন আগেই ঘোষণা দিয়েছিল ২৮ অক্টোবর ঢাকায় তারা মহাসমাবেশ করবে। পথের বাধার কথা চিন্তা করে অনেকেই ২৫ অক্টোবরের মধ্যেই ঢাকায় চলে আসেন। শেষ তিন দিনে ঢাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে তাঁরা তল্লাশি ও বাধার মুখে পড়েন। মুঠোফোন খুলে শনাক্ত করার চেষ্টা করা হয় কে বিএনপির কর্মী। অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়।
দেশের বিভিন্ন স্থানেও বেছে বেছে সংগঠকদের গ্রেপ্তার করা হয়। ২৭ অক্টোবর দেশের অনেক জায়গা থেকে ঢাকাগামী বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপরও প্রায় ১৭ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে থেকে বিএনপির বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী সমাবেশস্থলে এসে পৌঁছান।