7:03 pm, Sunday, 22 December 2024
প্যারিস অলিম্পিক

সোনা জিতে কুকুরকে উৎসর্গ নেদারল্যান্ডসের সাঁতারুর

Monzu-Info-Tech
Monzu-Info-Tech

সবার আগে ফিনিশ লাইন ছুঁতেই শিশুদের মতো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকেন শ্যারন ফন রাউভেনডাল। প্যারিস অলিম্পিকে মেয়েদের ১০ কিলোমিটার ম্যারাথন সাঁতারে ২ ঘণ্টা ৩ মিনিট ৩৪.২ সেকেন্ড সময় নিয়ে নেদারল্যান্ডসকে আজ সোনার পদক এনে দিয়েছেন তিনি।

অলিম্পিকের মতো সর্ববৃহৎ ক্রীড়া আসরে সাফল্যের শিখরে ওঠার পর যে কাউকেই আবেগ ছুঁয়ে যায়। রাউভেনডালও আজ অশ্রুসজল হয়ে পড়েছিলেন। সিন নদী জয় করে উঠে আসার পর কিছুক্ষণ কোচকে জড়িয়ে ধরেও কেঁদেছেন। এরপর বারবার তাঁর ডান কবজিতে আঁকা ছোট্ট উলকি প্রদর্শন করতে থাকেন রাউভেনডাল, যেখানে লেখা ‘রিও’।

তা দেখার পর সবারই বুঝে ফেলার কথা, রিও তাঁর বিশেষ কিছুই। সোনার পদকটা নিশ্চয়ই রিওকে উৎসর্গ করতে চাইছেন। শেষ পর্যন্ত সেটিই সত্যি হয়েছে। ৩০ বছর বয়সী এই দূরপাল্লার সাঁতারু তাঁর অলিম্পিক সাফল্য উৎসর্গ করেছেন রিওকে। তবে এই রিও কোনো শহর নয় কিংবা মানুষও নন; তাঁর পোষা কুকুর, যে গত মে মাসে মারা গেছে।

রাউভেনডাল বলেন, ‘সাঁতার আমার জীবনের সবকিছু, সেও (মৃত কুকুর রিও) আমার জীবনের সবকিছু ছিল। মে মাসে ওর শারীরিক জটিলতা দেখা দিলে কিছুক্ষণের মধ্যে মারা যায়। এরপর আমার পৃথিবী থমকে গেল। ওর জন্যই আমি আরও একবার সাঁতার কাটতে চেয়েছিলাম।’

রিও মারা যাওয়ার পর ভেঙে পড়েছিলেন রাউভেনডাল। সে সময় বাবাকে সব সময় পাশে পেয়েছেন। সেই কথা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘বাবা আমাকে বলেছিলেন, আর একবার সাঁতরাও এবং ওর জন্য এটা করে দেখাও (সোনা জিতে দেখাও)। আজ আমি সেটিই করেছি।’

হকারকে এখন কে না চেনে
অলিম্পিকে মেয়েদের ম্যারাথন সাঁতারের ১০ কিলোমিটার ইভেন্টে এ নিয়ে টানা তৃতীয়বার পদক জিতলেন রাউভেনডাল। ২০১৬ রিও অলিম্পিকে জিতেছিলেন সোনা, ২০২০ টোকিও অলিম্পিকে জেতেন রুপা। অস্ট্রেলিয়ার মোয়েশা জনসনকে পেছনে ফেলে প্যারিসে আজ আবারও সোনা পুনরুদ্ধার করলেন তিনি। জনসনের সাঁতার শেষ করতে লেগেছে ২ ঘণ্টা ৩ মিনিট ৩৯.৭ সেকেন্ড। তাঁর চেয়ে ৩.১ সেকেন্ড পর ফিনিশ লাইন ছুঁয়ে ব্রোঞ্জ জিতেছেন ইতালির জিনেভরা তাদেউচ্চি।

সোনা জয়ের পর মৃত কুকুরকে স্মরণ করে এভাবেই কাঁদতে থাকেন শ্যারন ফন রাউভেনডাল
সোনা জয়ের পর মৃত কুকুরকে স্মরণ করে এভাবেই কাঁদতে থাকেন শ্যারন ফন রাউভেনডালইনস্টাগ্রাম
রাউভেনডালের সঙ্গে পেরে না ওঠা জনসনের জন্য বড় এক ধাক্কাই। ৫ কিলোমিটার পর্যন্তও জনসনই ছিলেন সবার আগে। কিন্তু সিন নদীর পন্ত দে ইনভালিদে সেতুর নিচে একটি পাইলনে আসার পর জনসনকে অতিক্রম করেন রাউভেনডাল। জনসন জানান, সেতুর নিচে পিলারগুলোর মাঝখান দিয়ে প্রবল স্রোত বয়ে চলায় তাঁর সাঁতরাতে কিছুটা অসুবিধা হয়েছে।

এর আগে সিন নদীর পানি দূষিত হওয়ায় দুই দফা খেলোয়াড়দের অনুশীলন বাতিল করে প্যারিস অলিম্পিকের আয়োজক কমিটি। তবে পানির মান ভালো হওয়ায় শেষ পর্যন্ত সেখানকার সব ইভেন্ট ঠিকঠাকভাবেই হয়েছে।

 

Write Your Comment

About Author Information

Bangladesh Diplomat

কনক্রিট হল ব্লক- বাড়ির শক্ত ভিতের জন্য সেরা পছন্দ

প্যারিস অলিম্পিক

সোনা জিতে কুকুরকে উৎসর্গ নেদারল্যান্ডসের সাঁতারুর

Update Time : 02:01:33 am, Friday, 9 August 2024

সবার আগে ফিনিশ লাইন ছুঁতেই শিশুদের মতো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকেন শ্যারন ফন রাউভেনডাল। প্যারিস অলিম্পিকে মেয়েদের ১০ কিলোমিটার ম্যারাথন সাঁতারে ২ ঘণ্টা ৩ মিনিট ৩৪.২ সেকেন্ড সময় নিয়ে নেদারল্যান্ডসকে আজ সোনার পদক এনে দিয়েছেন তিনি।

অলিম্পিকের মতো সর্ববৃহৎ ক্রীড়া আসরে সাফল্যের শিখরে ওঠার পর যে কাউকেই আবেগ ছুঁয়ে যায়। রাউভেনডালও আজ অশ্রুসজল হয়ে পড়েছিলেন। সিন নদী জয় করে উঠে আসার পর কিছুক্ষণ কোচকে জড়িয়ে ধরেও কেঁদেছেন। এরপর বারবার তাঁর ডান কবজিতে আঁকা ছোট্ট উলকি প্রদর্শন করতে থাকেন রাউভেনডাল, যেখানে লেখা ‘রিও’।

তা দেখার পর সবারই বুঝে ফেলার কথা, রিও তাঁর বিশেষ কিছুই। সোনার পদকটা নিশ্চয়ই রিওকে উৎসর্গ করতে চাইছেন। শেষ পর্যন্ত সেটিই সত্যি হয়েছে। ৩০ বছর বয়সী এই দূরপাল্লার সাঁতারু তাঁর অলিম্পিক সাফল্য উৎসর্গ করেছেন রিওকে। তবে এই রিও কোনো শহর নয় কিংবা মানুষও নন; তাঁর পোষা কুকুর, যে গত মে মাসে মারা গেছে।

রাউভেনডাল বলেন, ‘সাঁতার আমার জীবনের সবকিছু, সেও (মৃত কুকুর রিও) আমার জীবনের সবকিছু ছিল। মে মাসে ওর শারীরিক জটিলতা দেখা দিলে কিছুক্ষণের মধ্যে মারা যায়। এরপর আমার পৃথিবী থমকে গেল। ওর জন্যই আমি আরও একবার সাঁতার কাটতে চেয়েছিলাম।’

রিও মারা যাওয়ার পর ভেঙে পড়েছিলেন রাউভেনডাল। সে সময় বাবাকে সব সময় পাশে পেয়েছেন। সেই কথা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘বাবা আমাকে বলেছিলেন, আর একবার সাঁতরাও এবং ওর জন্য এটা করে দেখাও (সোনা জিতে দেখাও)। আজ আমি সেটিই করেছি।’

হকারকে এখন কে না চেনে
অলিম্পিকে মেয়েদের ম্যারাথন সাঁতারের ১০ কিলোমিটার ইভেন্টে এ নিয়ে টানা তৃতীয়বার পদক জিতলেন রাউভেনডাল। ২০১৬ রিও অলিম্পিকে জিতেছিলেন সোনা, ২০২০ টোকিও অলিম্পিকে জেতেন রুপা। অস্ট্রেলিয়ার মোয়েশা জনসনকে পেছনে ফেলে প্যারিসে আজ আবারও সোনা পুনরুদ্ধার করলেন তিনি। জনসনের সাঁতার শেষ করতে লেগেছে ২ ঘণ্টা ৩ মিনিট ৩৯.৭ সেকেন্ড। তাঁর চেয়ে ৩.১ সেকেন্ড পর ফিনিশ লাইন ছুঁয়ে ব্রোঞ্জ জিতেছেন ইতালির জিনেভরা তাদেউচ্চি।

সোনা জয়ের পর মৃত কুকুরকে স্মরণ করে এভাবেই কাঁদতে থাকেন শ্যারন ফন রাউভেনডাল
সোনা জয়ের পর মৃত কুকুরকে স্মরণ করে এভাবেই কাঁদতে থাকেন শ্যারন ফন রাউভেনডালইনস্টাগ্রাম
রাউভেনডালের সঙ্গে পেরে না ওঠা জনসনের জন্য বড় এক ধাক্কাই। ৫ কিলোমিটার পর্যন্তও জনসনই ছিলেন সবার আগে। কিন্তু সিন নদীর পন্ত দে ইনভালিদে সেতুর নিচে একটি পাইলনে আসার পর জনসনকে অতিক্রম করেন রাউভেনডাল। জনসন জানান, সেতুর নিচে পিলারগুলোর মাঝখান দিয়ে প্রবল স্রোত বয়ে চলায় তাঁর সাঁতরাতে কিছুটা অসুবিধা হয়েছে।

এর আগে সিন নদীর পানি দূষিত হওয়ায় দুই দফা খেলোয়াড়দের অনুশীলন বাতিল করে প্যারিস অলিম্পিকের আয়োজক কমিটি। তবে পানির মান ভালো হওয়ায় শেষ পর্যন্ত সেখানকার সব ইভেন্ট ঠিকঠাকভাবেই হয়েছে।