12:26 pm, Thursday, 9 October 2025

ফ্লোটিলা আটকাতে ব্যস্ত ইসরায়েলি নৌবাহিনী, সেই সুযোগে মাছ ধরলেন গাজার জেলেরা

ফ্লোটিলা আটকাতে ব্যস্ত ইসরায়েলি নৌবাহিনী, সেই সুযোগে মাছ ধরলেন গাজার জেলেরা। ছবি: সংগৃহীত

Monzu-Info-Tech
Monzu-Info-Tech

ইসরায়েলি নৌবাহিনী যখন গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলাকে আটকে দিতে ব্যস্ত সময় পার করছিল, তখন সেই সুযোগে সমুদ্রের গভীরে গিয়ে মাছ ধরার বিরল সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন গাজার জেলেরা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে, ডজনখানেক জেলে একসঙ্গে ভারি জাল টেনে তীরে আনছেন আর তীরে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন উল্লাসে ফেটে পড়ছে।

বুধবার (১ অক্টোবর) ইসরায়েলি নৌবাহিনী ‘সুমুদ ফ্লোটিলা’ আটকায়, যাতে অন্তত ৪০টি দেশের ৪৫০ জনের বেশি মানবাধিকারকর্মী ছিলেন।

তাদের উদ্দেশ্য ছিল অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানো। এই অভিযানে ব্যস্ত থাকায়, সমুদ্রের গভীরে যাওয়ার নজিরবিহীন সুযোগ পান জেলেরা এমনটাই জানিয়েছেন গাজাবাসীরা।

স্থানীয়রা জানান, ফ্লোটিলার কারণে কিছু সময়ের জন্য ইসরায়েলি টহল জাহাজগুলো মনোযোগ হারায়, যার সুযোগে অনেক জেলে নির্ভয়ে জাল ফেলেন। এই সময়ে তারা গুলির ভয়, আটক হওয়ার আশঙ্কা বা নৌকা বাজেয়াপ্ত হওয়ার মতো পরিস্থিতি ছাড়াই মাছ ধরতে সক্ষম হন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটিকে অনেকেই “অবরোধের মধ্যেও জীবনের প্রতীক” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কেউ বলেছেন, “এটাই গাজাবাসীর সহনশীলতার প্রতিচ্ছবি”, আবার কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, “কেন গাজার জেলেরা আজও স্বাধীনভাবে মাছ ধরতে পারে না?”

উল্লেখ্য, ২০০০ সাল থেকে ইসরায়েল গাজার সমুদ্রসীমায় কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। বর্তমানে গাজাবাসী জেলেদের চলাচল সীমাবদ্ধ করা হয়েছে মাত্র ৬ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে, যেখানে ওসলো চুক্তি অনুযায়ী এই সীমা হওয়া উচিত ছিল ২০ মাইল।

গাজার কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, চলমান যুদ্ধ ও অবরোধে মাছ ধরার খাত প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। এতে প্রায় ৪ হাজার ৬০০ টন মাছ উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে, যার বাজারমূল্য দুই কোটিরও বেশি মার্কিন ডলার। এই খাতে কর্মরত প্রায় ৪ হাজার জেলে বেকার হয়ে পড়েছেন, ফলে খাদ্যসংকট আরও তীব্র হয়েছে যেখানে মাছ ছিল একসময় গাজার প্রধান প্রোটিন উৎস।

এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ কোনো মন্তব্য দেয়নি।

Write Your Comment

About Author Information

Bangladesh Diplomat

Popular Post

ফ্লোটিলা আটকাতে ব্যস্ত ইসরায়েলি নৌবাহিনী, সেই সুযোগে মাছ ধরলেন গাজার জেলেরা

Update Time : 07:48:41 pm, Saturday, 4 October 2025

ইসরায়েলি নৌবাহিনী যখন গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলাকে আটকে দিতে ব্যস্ত সময় পার করছিল, তখন সেই সুযোগে সমুদ্রের গভীরে গিয়ে মাছ ধরার বিরল সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন গাজার জেলেরা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে, ডজনখানেক জেলে একসঙ্গে ভারি জাল টেনে তীরে আনছেন আর তীরে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন উল্লাসে ফেটে পড়ছে।

বুধবার (১ অক্টোবর) ইসরায়েলি নৌবাহিনী ‘সুমুদ ফ্লোটিলা’ আটকায়, যাতে অন্তত ৪০টি দেশের ৪৫০ জনের বেশি মানবাধিকারকর্মী ছিলেন।

তাদের উদ্দেশ্য ছিল অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানো। এই অভিযানে ব্যস্ত থাকায়, সমুদ্রের গভীরে যাওয়ার নজিরবিহীন সুযোগ পান জেলেরা এমনটাই জানিয়েছেন গাজাবাসীরা।

স্থানীয়রা জানান, ফ্লোটিলার কারণে কিছু সময়ের জন্য ইসরায়েলি টহল জাহাজগুলো মনোযোগ হারায়, যার সুযোগে অনেক জেলে নির্ভয়ে জাল ফেলেন। এই সময়ে তারা গুলির ভয়, আটক হওয়ার আশঙ্কা বা নৌকা বাজেয়াপ্ত হওয়ার মতো পরিস্থিতি ছাড়াই মাছ ধরতে সক্ষম হন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটিকে অনেকেই “অবরোধের মধ্যেও জীবনের প্রতীক” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কেউ বলেছেন, “এটাই গাজাবাসীর সহনশীলতার প্রতিচ্ছবি”, আবার কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, “কেন গাজার জেলেরা আজও স্বাধীনভাবে মাছ ধরতে পারে না?”

উল্লেখ্য, ২০০০ সাল থেকে ইসরায়েল গাজার সমুদ্রসীমায় কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। বর্তমানে গাজাবাসী জেলেদের চলাচল সীমাবদ্ধ করা হয়েছে মাত্র ৬ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে, যেখানে ওসলো চুক্তি অনুযায়ী এই সীমা হওয়া উচিত ছিল ২০ মাইল।

গাজার কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, চলমান যুদ্ধ ও অবরোধে মাছ ধরার খাত প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। এতে প্রায় ৪ হাজার ৬০০ টন মাছ উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে, যার বাজারমূল্য দুই কোটিরও বেশি মার্কিন ডলার। এই খাতে কর্মরত প্রায় ৪ হাজার জেলে বেকার হয়ে পড়েছেন, ফলে খাদ্যসংকট আরও তীব্র হয়েছে যেখানে মাছ ছিল একসময় গাজার প্রধান প্রোটিন উৎস।

এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ কোনো মন্তব্য দেয়নি।