বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক যেন দিন দিন আরও গভীর হচ্ছে। এবার সেই বিতর্কে মুখ খুলেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির বিশেষ সহকারী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।
ফেসবুকে দেওয়া এক দীর্ঘ পোস্টে তিনি বিসিবি নির্বাচনকে ঘিরে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ, রাজনৈতিক পক্ষপাত ও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন। পোস্টের একপর্যায়ে তিনি লেখেন, “সবকিছু খুলে বললে অনেকের প্যান্ট খুলে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।”
ইশরাক জানান, বিসিবি নির্বাচন নিয়ে অনেক তথ্য ও অভ্যন্তরীণ ঘটনা জানা থাকলেও, নির্বাচনকে আরও প্রভাবিত না করতে তিনি এতদিন নীরব ছিলেন। এমনকি গণমাধ্যমে বক্তব্য দেওয়ার অনুরোধ পেলেও তিনি কৌশলগত কারণে তা এড়িয়ে গেছেন।
ইশরাকের দাবি, বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের কয়েকজন সন্তান বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের বিভিন্ন পদে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নের উদ্দেশ্যে। কিন্তু তাদের এই অংশগ্রহণ নিয়েই রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি করা হয়েছে।
তার ভাষায়, “এমনভাবে কিছু মানুষ মন্তব্য করেছেন, যেন রাজনীতিবিদ বা তাদের পরিবারের সদস্যরা ক্রীড়াঙ্গনে যুক্ত হতে পারেন না। এটা যেন কোনো অপরাধ! অথচ এদের অনেকেই ক্লাব পর্যায়ে সংগঠক বা পৃষ্ঠপোষক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত।”
পোস্টে ইশরাক অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকারের একজন উপদেষ্টার সরাসরি হস্তক্ষেপে বিভিন্ন জেলার কাউন্সিলরদের নাম পরিবর্তন করে শাসকদলের অনুগতদের মনোনয়ন নিশ্চিত করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) ওপর হুমকি ও চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে বলেও দাবি তার।
তিনি বলেন, “কিংস পার্টির ছত্রছায়ায় একজন উপদেষ্টা যেভাবে পুরো নির্বাচনী কাঠামো সাজিয়েছেন, তা বিসিবিতে একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনারই অংশ।”
১৭ বছর ধরে বিএনপির নেতাকর্মীদের পরিবারগুলোর ব্যবসা, চাকরি বা অন্য পেশাগত ক্ষেত্রেও বৈষম্যের শিকার হতে হয়েছেএমন অভিযোগ তুলে ইশরাক বলেন, “এখন সেই একই দৃষ্টিভঙ্গি বিসিবি নির্বাচনেও প্রয়োগ করা হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “বিএনপি বলেই বিসিবিতে কেন, এমন প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। কিন্তু ক্রীড়াঙ্গন কি কারও একার সম্পত্তি?”
পোস্টের একদম শেষে ইশরাক ইঙ্গিত দেন, বিসিবি নির্বাচনকে ঘিরে এই ‘নাটকের’ দ্বিতীয় পর্ব আগামী বছর সামনে আসতে পারে। একই সঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, যেভাবে কাউন্সিলরদের নাম পাল্টে, বিরোধীদের বাদ দিয়ে এবং প্রশাসনিক প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচন সাজানো হয়েছে, তা কতদিন টিকে থাকবে তা ভবিষ্যতেই প্রমাণ হবে।