ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না হলে বাংলাদেশে ভারত বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. মাহমুদুর রহমান।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড পিস স্টাডিজ (সিএসপিএস) আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মাহমুদুর রহমান বলেন, “নির্বাচনটা হওয়া খুবই জরুরি। কারণ নির্বাচন না হলে ভারত বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে। সেই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক জোরদার করতে হবে এবং কূটনৈতিকভাবে স্ট্র্যাটেজি গ্রহণ করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের আগে ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। পাশাপাশি ভারত থেকে আসা সম্ভাব্য হস্তক্ষেপ মোকাবিলায় তরুণ নেতৃত্ব ও জনসচেতনতা গড়ে তোলার তাগিদ দেন তিনি।
ড. ইউনূসকে নিয়ে সমালোচনার মধ্যেও মাহমুদুর রহমান বলেন, “তার অনেক ভুল থাকতে পারে, কিন্তু তিনি একমাত্র ব্যক্তি যিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির সামনে শেখ হাসিনার বিষয়ে সরাসরি কথা বলার সাহস দেখিয়েছেন। অন্য কেউ এত স্পষ্টভাবে ভারতের বিরুদ্ধে অবস্থান নেননি।”
তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার ব্যর্থতা থাকলেও, ভারতের বিরুদ্ধে তার অনমনীয়তা প্রশংসনীয়। ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে এখনো পুরোপুরি মেনে নেয়নি, সেটিই তাদের আচরণে স্পষ্ট।”
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রসঙ্গে মাহমুদুর রহমান প্রশ্ন তোলেন, “যদি আপনারা জাতির মেরুদণ্ড হন, তাহলে শেখ হাসিনা যখন দেশের সার্বভৌমত্ব ভারতের হাতে তুলে দিলেন, তখন আপনারা কী করলেন?”
তিনি বলেন, “সেনাবাহিনীর সদস্যরা শপথ নিয়েছেন দেশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য। ভয় কিংবা চাকরির চিন্তা করে সেই দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া উচিত নয়।”
মাহমুদুর রহমান বলেন, “জুলাই বিপ্লব পুরোপুরি সফল না হলেও, এটি একটি শক্ত বার্তা দিয়েছে। এর মূল দুই প্রতিপক্ষ ছিল শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকার এবং ভারত। তরুণরাই এই আন্দোলনের মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে। আমি তাদের ওপরই ভরসা রাখি।”
তিনি আরও বলেন, “দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এখনো ভারতের বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান নিতে পারেনি। তবে এনসিপি’র কিছু তরুণ নেতার মধ্যে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে, যেটা আশাজাগানিয়া।”
সিএসপিএসের নির্বাহী পরিচালক ড. মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন কর্নেল (অব.) আশরাফ আল দীন, দৈনিক নয়া দিগন্তের নির্বাহী সম্পাদক মাসুমুর রহমান খলিলী, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান বীরপ্রতীক, সাবেক সচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন, এবং মেজর (অব.) জামাল হায়দার প্রমুখ।