রংপুরের তারাগঞ্জে ঘুষ নেওয়ার একটি ভিডিওকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজির অভিযোগের জেরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক অঙ্গন। ভূমি অফিসের সহায়ক রশিদুজ্জামান বিপ্লবের ঘুষ নেওয়ার ভিডিও প্রকাশকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও জামায়াতের মধ্যে শুরু হয়েছে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি ও দোষারোপ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহায়ক বিপ্লব দীর্ঘদিন ধরে সেবাপ্রার্থীদের কাছ থেকে অবৈধ অর্থ আদায় করতেন। এক সেবাপ্রার্থী তার ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ধারণ করলে সেটি কিছু রাজনৈতিক নেতার হাতে পৌঁছায়। এরপর তারা ভিডিও জিম্মি করে বিপ্লবের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে।
অভিযুক্ত বিপ্লব বলেন, “আমার কাছে দুই লাখ টাকা চাওয়া হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ৪৭ হাজার টাকা দিয়ে রফা করতে হয়েছে। যারা টাকা নিয়েছে তারা নিজেদের রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের পরিচয় দিয়েছিল।”
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, ঘুষ নেওয়ার সময় বিপ্লব বলেন, “উনাক আরও ৫০০ দিতে হবে। আমি তো ৫০০’র নিচে করি না।” সেবাগ্রহীতা তখন জানান, “স্যারকে তো দিছি, আর কত দিব।” জবাবে বিপ্লব বলেন, “আরও ২০০ দিয়া ঝামেলা মারি দিয়া চলি যা।”
এ ঘটনার পর ২৩ সেপ্টেম্বর তারাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদল এক বিবৃতিতে অভিযোগ করে, জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা ছাত্রদলের নাম ভাঙিয়ে বিপ্লবের কাছে চাঁদা দাবি করেছে, যা ছাত্রদলের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। তারা দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায়।
উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন কাজল বলেন, “আমাদের কাছে প্রমাণ রয়েছে, জামায়াত-শিবিরের নেতারা ছাত্রদলের নাম ব্যবহার করে টাকা নিয়েছে। আমরা এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছি।”
অন্যদিকে, ২৪ সেপ্টেম্বর পাল্টা বিবৃতিতে তারাগঞ্জ জামায়াত এসব অভিযোগকে “ভিত্তিহীন ও আজগুবি” বলে দাবি করে। উপজেলা আমির এস. এম. আলমগীর হোসেন বলেন, “ছাত্রদল মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমাদের সংগঠনকে কালিমালিপ্ত করতে চাচ্ছে। আমরা এই ষড়যন্ত্রের তীব্র প্রতিবাদ জানাই।”
ঘটনার বিষয়ে তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল রানা জানান, বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে এবং অভিযুক্ত কর্মচারী বিপ্লবকে মিঠাপুকুরের কাফ্রিখাল ইউনিয়ন ভূমি অফিসে বদলি করা হয়েছে।