জামায়াতে ইসলামী পতিত ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, অনেকে ফ্যাসিস্টদের প্রত্যাবর্তনের চিন্তা করছেন, তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করার চেষ্টা করছেন। তারা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন না। জামায়াতে ইসলামী আওয়ামী লীগকে সন্তুষ্ট করার জন্য সবসময় কাজ করেছে। শহীদ জিয়াউর রহমান তাদের রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছিলেন, অথচ তারা কখনো তাকে সমর্থন করেনি, বরং বারবার সমালোচনা করেছে।
তিনি অভিযোগ করেন, প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনায় জামায়াত আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকেছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে গেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগের জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনেও তারা অংশ নিয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র টিটোকে শিবির গুলি করে হত্যা করেছে।
২০০৮ সালের নির্বাচন প্রসঙ্গেও রিজভী বলেন, বিএনপি না যেতে চাইলে জামায়াতের নেতারা চাপ দিয়েছিল। বর্তমানে তারা আবার স্বরূপে প্রকাশ পেয়েছে এবং আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন চাইছে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক চাইছে। তিনি শেখ হাসিনাকে রক্তপিপাসু দানব আখ্যা দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের পুনর্জাগরণের সুযোগ নেই।
বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশের মানুষ ধর্মভীরু হলেও গণতন্ত্রপ্রিয়। তারা কথা বলতে চায় নির্ভয়ে। জনগণকে জোর করে ফ্যাসিবাদের নতুন ধারায় আনা যাবে না। তিনি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, হেলিকপ্টার থেকে গুলি করার নির্দেশ দিয়েছেন, সরকারি ভবনে আগুন লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন। মেট্রোরেল স্টেশন পোড়ানোসহ সব নাশকতার পেছনে শেখ হাসিনার নির্দেশ ছিল। অথচ সেই সময়ে দায় চাপানো হয়েছিল আন্দোলনকারীদের ওপর।
রিজভী আরও বলেন, শেখ হাসিনার টেলিফোন কথোপকথনের রেকর্ড ও ডকুমেন্ট এখন আদালতে জমা হচ্ছে, যা প্রমাণ করছে তিনি নিজেই নাশকতা করেছেন। যদি ফ্যাসিস্ট শক্তির পুনরুত্থান ঘটে তবে গণতন্ত্রকামী মানুষ ভয়াবহ পরিণতির শিকার হবে, বলেন তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টার কর্মকাণ্ড নিয়েও প্রশ্ন তোলেন রিজভী। তিনি অভিযোগ করেন, উপদেষ্টা সজীব ভূঁইয়া তার নিজ এলাকায় প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ নিয়েছেন, যা বৈষম্যমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি বলেন, সজীব ভূঁইয়া ভবিষ্যতে এমপি হওয়ার জন্য এভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, একজন উপদেষ্টা বা উচ্চপর্যায়ের আমলা নিজের এলাকায় হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প নিতে পারেন না। কেবিনেট সচিবের রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। রিজভীর ভাষায়, এটি দুঃখজনক এবং সরকারি শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতার পরিপন্থী।