দলীয় কোন্দল, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নির্বাচনী আলোচনা যখন তুঙ্গে, ঠিক সেই সময় মুখ খুললেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত হলেও, সাম্প্রতিক নানা গুঞ্জন ও দলীয় ভাঙনের প্রেক্ষাপটে তার মন্তব্য নতুন মাত্রা এনেছে।
এক সাক্ষাৎকারে জি এম কাদের বলেন, “সব রাজনৈতিক দলকে নিয়েই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হওয়া উচিত। আর সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ না থাকলে সেটি গ্রহণযোগ্য হবে না।” তিনি আরও প্রশ্ন রাখেন, “আওয়ামী লীগের ভোটাররা কি নাগরিকত্ব হারিয়ে ফেলেছে? তারা কি আর ভোটার তালিকায় থাকবে না?” তার মতে, আওয়ামী লীগের অনেক ভোটার জাতীয় পার্টিকেও ভোট দিতে পারেন, এতে অস্বাভাবিক কিছু নেই।
বিএনপি প্রসঙ্গে জি এম কাদের বলেন, “যদি তারা ভালো নির্বাচনী পরিবেশ ও প্রতিশ্রুতি দিতে পারে—যে ক্ষমতায় গেলে প্রতিশোধ নেবে না—তাহলে তারাও ভোট পেতে পারে।” তবে জামায়াত নিয়ে তিনি দ্ব্যর্থহীন বক্তব্য দেন—“জামায়াতের পক্ষে মানুষের আস্থা অর্জন করা সম্ভব নয়।”
নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে তিনি বলেন, “শুধু একটি পক্ষকে সামনে রেখে নির্বাচন করলে জনগণের আস্থা থাকে না। সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হলে সেটি দেশ-বিদেশে স্বীকৃতি পাবে।” জামায়াত নিষিদ্ধের বিষয়েও তিনি মত দেন, “তাদের নিষিদ্ধ করা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।”
ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ঘিরে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জি এম কাদের দাবি করেন, “বিএনপিকে দুর্বল করে জামায়াতকে সামনে আনার পেছনে একটি নতুন ধরনের সরকার গঠনের পরিকল্পনা থাকতে পারে। আমরা মনে করি, নির্বাচন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নয়, বরং নতুন সরকারের অধীনেই হওয়া উচিত।”
দল থেকে কিছু নেতা বিদ্রোহ করলেও, জাতীয় পার্টি এখন আরও সুসংগঠিত ও শক্তিশালী বলে দাবি করেন জি এম কাদের। তার ভাষায়, “এই সংকট আমাদের আরও ঐক্যবদ্ধ করেছে।”