রাজধানীর উত্তরা এলাকায় ‘সমন্বয়ক’ পরিচয় দিয়ে বাসায় ঢুকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা ফারিয়া আক্তার তমাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের একটি বাসায় ঢুকে এই চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারকৃত অপর দুই ব্যক্তি হলেন—এ এইচ এম নোমান রেজা ও তানজিল হোসেন। ঘটনার পরপরই ভুক্তভোগী দেলোয়ার হোসেন উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করলে রাতেই বিমানবন্দর ও উত্তরার বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, নিজেদের ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে দেলোয়ার হোসেনের বাসায় প্রবেশ করে অভিযুক্ত তিনজন। তারা জানান, দেলোয়ারের বিরুদ্ধে থাকা ‘মামলা থেকে অব্যাহতি’ পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন। এ জন্য দাবি করেন ১০ লাখ টাকা।
দেলোয়ার হোসেন প্রাথমিকভাবে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা তাদের দেন। এরপর তাকে চাপ প্রয়োগ করে শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টার মধ্যে বাকি টাকা দিতে বলা হয়। টাকা না দিলে পরিবারকে ‘মামলায় জড়িয়ে’ ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হয়।
পরিবারটির অভিযোগে ভিত্তিতে পুলিশ প্রথমে বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে নোমান রেজাকে। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী উত্তরার জসীমউদ্দীন এলাকা থেকে ফারিয়া ও তানজিলকেও আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে সাড়ে ৪ লাখ টাকা।
উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি আব্দুর রহিম মোল্লাহ বলেন, “তিনজনের বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে অপকর্মের একাধিক তথ্য পাওয়া গেছে।”
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুল মালেক খান জানান, শুক্রবার আসামিদের আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, নোমান রেজা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ বিমানবন্দর থানার সাবেক সদস্যসচিব ছিলেন। তার বিরুদ্ধে একই কৌশলে একাধিক ব্যবসায়ীকে ভয়ভীতি ও মামলা দিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগীদের ভাষ্য অনুযায়ী, এই চক্রটি বড় ব্যবসায়ীদের টার্গেট করত এবং মামলা-মোকদ্দমার ভয় দেখিয়ে ২ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করত। দাবি না মানলে হুমকি, হয়রানি, এমনকি মারধরের মতো ঘটনাও ঘটেছে।
উল্লেখ্য, ফারিয়া আক্তার তমা সম্প্রতি আলোচনায় এসেছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমানের বাড়ির নিচে বিক্ষোভ করে তার গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে। কিছুদিন না যেতেই তিনি নিজেই চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার হলেন।