বরিশালের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. কবির হোসেন পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে একের পর এক নারীকে বিয়ে করে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারীদের দাবি, কবির হোসেন দেশের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত থাকাকালে অন্তত ১৭টি বিয়ে করেছেন এবং পরবর্তীতে অনেককেই তালাক দিয়ে, কেউকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বরিশাল নগরীর কাশিপুর বন সংরক্ষক কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে ১২ জন নারী, যারা নিজেদের কবির হোসেনের স্ত্রী বলে দাবি করেন, মানববন্ধন করেন এবং তার শাস্তির দাবি জানান।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, চাঁদপুরের মতলব উপজেলার বাসিন্দা বন কর্মকর্তা কবির হোসেন পাটোয়ারী সরকারি চাকরি, বিদেশে পাঠানো কিংবা নানা সুযোগ-সুবিধার প্রলোভন দেখিয়ে একাধিক নারীকে বিয়ে করেছেন। পরে পরিবারের কাছ থেকে যৌতুকের দাবিতে চাপ সৃষ্টি করেন, না দিলে করেন শারীরিক নির্যাতন। এভাবেই একের পর এক সম্পর্ক ছিন্ন করে ফের নতুন বিয়ের পেছনে ছুটেছেন তিনি।
চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি খুলনার চাকরিজীবী খাদিজা আক্তারকে বিয়ে করেন কবির। অভিযোগ, বিয়ের দ্বিতীয় দিনেই স্ত্রীর বাবার সম্পত্তির অংশ লিখে দেওয়ার দাবি তোলেন তিনি। রাজি না হওয়ায় মারধর করে সরকারি বাসা থেকে বের করে দেন খাদিজাকে। পরে খাদিজাও মানববন্ধনে অংশ নেন।
মানববন্ধনে উপস্থিত নারীদের ভাষ্য, কবির হোসেন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ২–৪টি করে বিয়ে করেছেন। তার আগের স্ত্রীদের মধ্যে ঢাকার নাজনিন আক্তার শীলা, নারায়ণগঞ্জের সোনিয়া, খুলনার নাসরিন আক্তার দোলনসহ আরও অনেকেই রয়েছেন।
নাসরিন বলেন, “সে বিয়ের নাম করে আমাদের জীবন ধ্বংস করেছে। পরে নির্যাতন করে ঘরছাড়া করেছে।”
বরিশালের জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসেন বলেন, “বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, কবির হোসেনের বিরুদ্ধে দাপ্তরিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে। প্রতারণার মামলায় একবার গ্রেপ্তারও হন তিনি। তবে জামিনে ছাড়া পান।
স্ত্রীরা বলছেন- “সাধারণ মানুষ হলে এত বিয়ে করলে এখন জেলে থাকতো, কিন্তু তিনি প্রভাবশালী কর্মকর্তা হওয়ায় বারবার পার পেয়ে যাচ্ছেন। আমরা এর বিচার চাই।”