নেপালের অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করলেন দেশটির সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশিলা কার্কি। তিনিই ইতিহাসে প্রথম নারী যিনি এ পদে অধিষ্ঠিত হলেন। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে নেপালের রাষ্ট্রপতি ভবনে এক অনুষ্ঠানে তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পৌডেল।
দেশজুড়ে চলমান দুর্নীতি বিরোধী সহিংস আন্দোলনের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের পর অস্থির পরিস্থিতিতে নেতৃত্ব নিতে এগিয়ে এলেন কার্কি। রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে জানানো হয়, সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগদেল এবং আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা শেষে তার নাম চূড়ান্ত করা হয়। আন্দোলনকারী তরুণদের পক্ষ থেকেই মূলত কার্কির নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল।
গত সপ্তাহজুড়ে চলা আন্দোলনে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫১ জন এবং আহত হয়েছেন আরও ১ হাজার ৩০০ জনের বেশি। তরুণদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা এই আন্দোলন ‘জেন-জি আন্দোলন’ নামে পরিচিতি পেয়েছে। মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত থেকেই আন্দোলনের সূচনা। যদিও পরে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলেও উত্তাল পরিস্থিতি থামে প্রধানমন্ত্রী ওলির পদত্যাগের মাধ্যমে।
এদিকে, আন্দোলনকারীদের একাংশ প্রকৌশলী কুলমান ঘিসিংকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাইলেও তার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। ঘিসিং নেপালে বিদ্যুৎ খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান। এছাড়াও কাঠমাণ্ডুর তরুণ মেয়র এবং জনপ্রিয় র্যাপার বলেন্দ্র শাহের নামও আলোচনায় এসেছিল, তবে তিনি নিজেই কার্কির প্রতি সমর্থন জানান।
প্রসঙ্গত, সুশিলা কার্কি ২০১৬ সাল থেকে ২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত নেপালের প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি তার সততা, দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান এবং দৃঢ় নেতৃত্বের জন্য পরিচিত। দায়িত্বকালেই ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় তিনি আলোচনায় আসেন। তবে এক বছরের মধ্যেই তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু হয়, যা শেষ পর্যন্ত জনচাপে বাতিল হয়।