সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের অর্জন ধরে রাখার কোনো ভিত্তি থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা ও চ্যালেঞ্জ: সফল নির্বাচন আয়োজনে সরকার, রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের করণীয়’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
সালাহউদ্দিন বলেন, “আগামী ফেব্রুয়ারিতে নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা জাতির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। নির্বাচন কমিশন যে রোডম্যাপ দিয়েছে, সে অনুযায়ী কাজ হচ্ছে বটে, তবে সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে সরকারের অর্জন বলে কিছুই থাকবে না।”
তিনি আরও বলেন, দেশে এখনো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণের বিষয়ে একমত হওয়া যায়নি। সময় আছে, রাজনৈতিক দলগুলো আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সালাহউদ্দিনের মতে, অবাধ নির্বাচনের জন্য স্বাধীন নির্বাচন কমিশন, স্বাধীন বিচার বিভাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা এবং মুক্ত গণমাধ্যম অত্যন্ত জরুরি। এসব নিশ্চিতে ব্যর্থ হলে ভবিষ্যতের নির্বাচনগুলোও প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
সংবিধান সংশোধন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “শুধু নির্বাচিত সংসদই তা করতে পারে। অন্য কোনোভাবে করা হলে তা আদালতে চ্যালেঞ্জ হতে পারে।” নারী প্রতিনিধিত্ব বিষয়ে সালাহউদ্দিন জানান, তাদের পক্ষ থেকে সরাসরি নির্বাচনে নারীদের অংশগ্রহণের কোটা ১০ শতাংশ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
সভায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেমন হবে, তার একটি পরীক্ষা ছিল ডাকসু নির্বাচন। এতে রাজনৈতিক দল, সুধী সমাজ ও শিক্ষার্থীরা উত্তীর্ণ হয়েছে।”
তিনি জানান, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে—এ বিষয়ে সরকার অটল রয়েছে এবং নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৮ লাখ সদস্য মোতায়েন থাকবে। তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য শুধু সরকারের প্রস্তুতি নয়, প্রার্থীদের সদিচ্ছা ও জনগণের অংশগ্রহণই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি ইউটিউবকে “মিথ্যা তথ্যের কারখানা” হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, “বর্তমান প্রজন্ম ইউটিউব থেকে তথ্য নিচ্ছে, যেখানে অনেক সময় ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়। এসব নিয়ন্ত্রণ করতে গেলেই বলা হয়, সরকার গণমাধ্যমবিরোধী।”
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, “নির্বাচনের পরিবেশ গঠনের কাজ তফসিল ঘোষণার পর নয়, এখন থেকেই শুরু করতে হবে। কোথাও সংঘাত হলে, তা কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটর করতে হবে।”
সভায় আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, এনসিপির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান এবং বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।