ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষা করতে আমরা নানা ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করি। কিন্তু অনেক সময়ই ভুলে যাই, বাইরের চেয়েও খাদ্যাভ্যাসের প্রভাব ভেতর থেকে ত্বকে পড়ে আরও গভীরভাবে। প্রতিদিনের খাবারেই লুকিয়ে থাকতে পারে এমন কিছু উপাদান, যা ত্বকের বার্ধক্য ত্বরান্বিত করে, উজ্জ্বলতা কমায় এবং প্রাকৃতিক আর্দ্রতা কেড়ে নেয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিচের খাবারগুলো দীর্ঘমেয়াদে ত্বকের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে:
১. চিনি ও আইসক্রিম
অতিরিক্ত চিনি এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাট ত্বকের কোলাজেন ধ্বংস করে। এতে গ্লাইকেশন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়, যার ফলে ত্বকে বলিরেখা পড়ে এবং সেটি ঝুলে যায়। নিয়মিত আইসক্রিম খেলে এই প্রক্রিয়া আরও দ্রুত হয়, যদিও মাঝে মাঝে খাওয়ায় সমস্যা নেই।
২. সোডা ও মিষ্টি পানীয়
সোডা বা কোমল পানীয়তে থাকা চিনি ও ফসফরিক অ্যাসিড শরীর থেকে ক্যালসিয়াম শোষণ করে নেয়। এতে দাঁত, হাড় এবং ত্বকের গঠন দুর্বল হয়ে পড়ে। একই সঙ্গে বাড়ে ত্বকের প্রদাহ ও পানিশূন্যতা।
৩. প্যাকেটজাত ফলের রস
বাজারজাত ফলের রসে ফাইবার থাকে না, কিন্তু চিনি থাকে বেশি। এতে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা হঠাৎ বেড়ে গিয়ে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা নষ্ট করে দেয়। এর পরিবর্তে সম্পূর্ণ তাজা ফল খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা।
৪. মার্জারিন ও ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবার
অনেকে মাখনের বদলে মার্জারিন বেছে নেন, কিন্তু এতে থাকা ট্রান্স ফ্যাট ত্বকের রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত করে, বলিরেখা বাড়ায় এবং ত্বককে শুষ্ক করে তোলে। বরং সীমিত পরিমাণে প্রাকৃতিক মাখন তুলনামূলক কম ক্ষতিকর।
৫. কৃত্রিম সুইটনার
চিনি এড়াতে ব্যবহৃত অনেক কৃত্রিম মিষ্টিকারক অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য নষ্ট করে। এতে হজমে ব্যাঘাত ঘটে এবং শরীরের বিপাক ক্রিয়া ব্যাহত হয়, যার প্রভাব পড়ে ত্বকের বার্ধক্যে।
৬. মাফিন, কেক ও ময়দাজাতীয় খাবার
এইসব মুখরোচক খাবারে থাকে চিনি, রিফাইন্ড ফ্লাওয়ার ও ভেজিটেবল অয়েল। একসঙ্গে এগুলো রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা হঠাৎ বাড়িয়ে দেয় এবং এনার্জি ক্র্যাশ ঘটায়, যা প্রদাহ তৈরি করে ত্বকে বলিরেখা বাড়ায়।
৭. অ্যালকোহল
অ্যালকোহল ত্বককে ডিহাইড্রেট করে, লিভারের কার্যক্ষমতা কমায় এবং ভিটামিন ‘এ’-এর ঘাটতি তৈরি করে। এতে ত্বক হয়ে পড়ে শুষ্ক, ক্লান্ত ও প্রাণহীন।
সুস্থ ত্বকের জন্য করণীয়-
* প্রচুর পানি পান করুন
* ঘুম ঠিক রাখুন
* তাজা ফলমূল ও সবজি খান
* প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন
* খাদ্যাভ্যাসে ভারসাম্য রাখুন