অসুস্থতার পর প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে এসে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, চিকিৎসার জন্য তিনি বিদেশের বদলে আল্লাহ এবং দেশের চিকিৎসকদের উপরই ভরসা রেখেছেন। তিনি বলেন, “আল্লাহর কসম, দেশের মাটিতে নাগরিকদের রেখে আমার পক্ষে বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব হয়নি।”
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকার কাফরুল দক্ষিণ থানার আয়োজিত এক ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আমাদের দেশের চিকিৎসকদের উপর মানুষের আস্থা কমে যাচ্ছে। সামর্থ্যবানরা সামান্য অসুস্থ হলেই বিদেশে ছোটেন, যেন দেশের চিকিৎসকরা কিছুই পারেন না। অথচ কোটি কোটি মানুষ আজও দেশের চিকিৎসকদের ওপর নির্ভরশীল।”
তিনি জানান, অসুস্থ হওয়ার পর চিকিৎসকরা সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, এমনকি আমেরিকায় যাওয়ার পরামর্শ দিলেও তিনি সেসব প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। “আমি বলেছিলাম, আল্লাহ যদি সুস্থ করেন, তবে তিনি বাংলাদেশেও করতে পারেন। চিকিৎসকদের হাতেই আমি সুস্থতা পেয়েছি।”
অপারেশনের সময় তিনি চিকিৎসকদের অনুরোধ করে বলেন, “আমার পরিচয় ভুলে যান, আমাকে একজন সাধারণ রোগী হিসেবে দেখুন। যদি আমার মৃত্যু হয়, সেটি আল্লাহর ইচ্ছা, আপনাদের কোনো দায় থাকবে না।”
তিনি আরও বলেন, “আমি শুনেছি, কোটি কোটি মানুষ আমার জন্য দোয়া করেছে। আবার অনেকে চিকিৎসকদের জন্যও দোয়া করেছেন, যাতে তারা সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিতে পারেন।”
বিদেশে চিকিৎসা নিতে গিয়ে অনেকে আর জীবিত ফেরেন না— এমন বাস্তবতা তুলে ধরে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “অনেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে গিয়ে কফিনে ফিরে আসেন, আবার দেশের হাসপাতাল থেকে অসংখ্য মানুষ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন।”
তিনি দেশের চিকিৎসকদের উৎসাহিত করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “চিকিৎসকদের প্রতি আস্থা বাড়াতে হবে। তাদের যোগ্যতা, দক্ষতা ও সততার প্রতি আস্থা রাখলে দেশেই মানসম্মত চিকিৎসা সম্ভব।”
শেষে তিনি বলেন, “আল্লাহ যদি আমাকে সুস্থ রাখেন, আমি আমার জীবন দেশের মানুষের কল্যাণে ব্যয় করব। আমি গুনাহগার, কিন্তু আল্লাহর দেওয়া হায়াত ও নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে চাই।”
প্রায় দেড় মাস পর প্রথমবার জনসম্মুখে এসে বক্তব্য দেন জামায়াতের আমির। বক্তব্যের শুরুতেই তিনি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন সুস্থ হয়ে ফিরে আসার জন্য।