যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নাম বদলে ‘যুদ্ধ দফতর’ রাখার পরিকল্পনা করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এক নির্বাহী আদেশে তিনি জানিয়েছেন, ‘ডিপার্টমেন্ট অব ডিফেন্স’ নামটির পরিবর্তে ঐতিহাসিক নাম ‘ডিপার্টমেন্ট অব ওয়ার’ আবার চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যদিও এই নাম এখনই আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হচ্ছে না, তবে মন্ত্রণালয় ও কর্মকর্তারা এটি “দ্বিতীয় নাম” হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।
ট্রাম্পের মতে, বর্তমান নামটি আত্মরক্ষার মনোভাবকে তুলে ধরে, যেখানে ‘যুদ্ধ দফতর’ নামটি যুক্তরাষ্ট্রের শক্তি, প্রস্তুতি ও আগ্রাসী কৌশলের প্রতীক। তিনি মনে করেন, এই পরিবর্তন আমেরিকার জাতীয় সংকল্প ও ইতিহাসের সঙ্গে আরও সামঞ্জস্যপূর্ণ।
এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে, বর্তমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথকে ‘সেক্রেটারি অব ওয়ার’ বা যুদ্ধমন্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেওয়ারও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। একইভাবে ডিপার্টমেন্টের অন্যান্য কর্মকর্তারাও ‘ওয়ার’ টার্মটি ব্যবহার করতে পারবেন।
তবে যুক্তরাষ্ট্রে কোনও নির্বাহী সংস্থার আনুষ্ঠানিক নাম বদলাতে হলে কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন। ট্রাম্প তার আদেশে হেগসেথকে কংগ্রেসে প্রয়োজনীয় আইন প্রস্তাবনার পরামর্শ দিয়েছেন।
এ নাম পরিবর্তনের পরিকল্পনা নিয়ে mixed প্রতিক্রিয়া এসেছে। সমালোচকরা এটিকে রাজনৈতিক প্রচারণার অংশ এবং পেন্টাগনের দীর্ঘদিনের ব্যয়সংযম নীতির পরিপন্থী হিসেবে দেখছেন। কারণ, এই পরিবর্তনে ইউনিফর্ম, লোগো, ওয়েবসাইট, ইমেইলসহ অসংখ্য দাপ্তরিক বিষয় হালনাগাদ করতে হবে, যার খরচ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে।
অনেকে মনে করছেন, এটি এমন এক সময়ে এসেছে যখন চীন সামরিক শক্তি প্রদর্শন করছে, এবং ট্রাম্প এই পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি কৌশলগত বার্তা দিতে চাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, ১৭৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক নামই ছিল ‘ডিপার্টমেন্ট অব ওয়ার’। ১৯৪৭ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, এর নাম পরিবর্তন করে ‘ডিপার্টমেন্ট অব ডিফেন্স’ রাখা হয়।
ট্রাম্প দাবি করেছেন, যখন এর নাম ছিল যুদ্ধ দফতর, তখন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বযুদ্ধ জিতেছিল। তার মতে, সেই ঐতিহাসিক নামেই ফিরে যাওয়া সময়ের দাবি।
তবে কিছুটা ব্যতিক্রমী সুরে ট্রাম্প বলেছেন, “আমি মনোযোগ চাই না, আমি কেবল যুদ্ধ থামাতে চাই, জীবন বাঁচাতে চাই।”—এ মন্তব্য তিনি করেছেন নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে।