অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আরও একবার ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। বুধবারের (৩ সেপ্টেম্বর) একক হামলায় কমপক্ষে ৭৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আল জাজিরা। নিহতদের মধ্যে গাজা সিটির বাসিন্দা অন্তত ৪৩ জন।
হামাস জানিয়েছে, এই হামলায় পুরো পরিবারকে লক্ষ্য করে হত্যা করা হয়েছে, যা একটি পরিকল্পিত গণহত্যার অংশ। দলটি জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মহলের কাছে অবিলম্বে হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছে।
গাজার উত্তরাঞ্চলের শেখ রাদওয়ান এলাকায় একটি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের তাঁবুতে ইসরায়েলি গ্রেনেড নিক্ষেপে আগুন ধরে যায়। এক বাসিন্দা জাকিয়া সামি বলেন, ‘শেখ রাদওয়ান জ্বলছে। যদি গাজা সিটির দখল থামানো না যায়, আমরা সবাই শেষ হয়ে যাব।’
অন্যদিকে, খাদ্য সংকট ও ওষুধের অভাবে গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহারে মারা গেছে আরও ৬ জন, যার মধ্যে একজন শিশু রয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলমান অবরোধের মধ্যে এখন পর্যন্ত অনাহারে প্রাণ হারিয়েছে ৩৬৭ জন, যাদের মধ্যে ১৩১ জন শিশু।
গত তিন সপ্তাহে গাজা সিটিতে ইসরায়েলের অন্তত ১০০ রোবট বিস্ফোরণের ঘটনায় ধ্বংস হয়ে গেছে বহু আবাসিক ভবন ও মহল্লা। শুধু গাজা সিটিতেই ১৩ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া অভিযানে প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ১,১০০ জন ফিলিস্তিনি।
হামাস জানিয়েছে, তারা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত এবং বন্দি বিনিময়ের ভিত্তিতে সব ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
জাতিসংঘ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছে, গাজা সিটির দখল প্রচেষ্টা প্রায় ১০ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করতে পারে। ১৪ থেকে ৩১ আগস্টের মধ্যে প্রায় ৮২ হাজার ফিলিস্তিনিকে তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।
গাজা থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, “এটা যেন এক দুঃস্বপ্ন। পুরো গাজা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। মানুষের বহু বছরের গড়ে তোলা জীবন চোখের সামনে মাটির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে।”