12:08 am, Thursday, 4 September 2025

পাসপোর্ট ছাড়া ভারতে প্রবেশ করা বাংলাদেশিদের জন্য নতুন নিয়ম চালু

পাসপোর্ট ছাড়া ভারতে প্রবেশ করা বাংলাদেশিদের জন্য নতুন নিয়ম চালু। ছবি: সংগৃহীত

Monzu-Info-Tech
Monzu-Info-Tech

ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে পাসপোর্ট বা ভ্রমণ নথিপত্র ছাড়াই ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশসহ আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নাগরিকদের জন্য বড় ধরনের সুবিধা দিয়েছে ভারত সরকার। সোমবার থেকে কার্যকর হওয়া ভারতের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ফরেনার্স অ্যাক্ট-২০২৫ এর আওতায় ওই সংখ্যালঘুরা কোনও ধরনের শাস্তির মুখোমুখি হবেন না বলে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পাশাপাশি আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ধর্মীয় নির্যাতন থেকে বাঁচতে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সংখ্যালঘু হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পারসি ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের যে সদস্যরা পাসপোর্ট কিংবা অন্যান্য ভ্রমণ নথি ছাড়াই ভারতে প্রবেশ করেছেন, তারা সেখানে অবস্থানের অনুমতি পাবেন। এমনকি যাদের নথির মেয়াদ দেশটিতে প্রবেশের পর শেষ হয়ে গেছে, সোমবার থেকে কার্যকর হওয়া আইনের আওতায় তাদের বিরুদ্ধেও কোনও ধরনের শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে না।

সোমবার ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ফরেনার্স (এক্সেম্পশন) আদেশ ২০২৫ অনুযায়ী, নেপাল ও ভুটানের নাগরিকদের পাশাপাশি তিব্বতিরা, যারা ১৯৫৯ সাল থেকে ২০০৩ সালের ৩০ মের মধ্যে কাঠমান্ডুতে ভারতীয় দূতাবাস কর্তৃক জারি করা বিশেষ প্রবেশ অনুমতিপত্র নিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন এবং সংশ্লিষ্ট বিদেশি নিবন্ধন কর্মকর্তার কাছে নিবন্ধন করেছিলেন, তাদেরও একই ধরনের ছাড় দেওয়া হয়েছে।

তবে নেপাল ও ভুটানের নাগরিকরা যদি চীন, ম্যাকাও, হংকং বা পাকিস্তান হয়ে ভারতে প্রবেশ কিংবা প্রস্থান করেন, তাহলে তারা আইনের ২১ নম্বর ধারার সুবিধা পাবেন না। এই ধারা অনুযায়ী, বৈধ পাসপোর্ট অথবা ভিসা ছাড়া ভারতে প্রবেশ করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ৫ লাখ রুপি জরিমানা হতে পারে। ২৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী, ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ভারতে থেকে গেলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ৩ লাখ রুপি জরিমানা হতে পারে।

আইদেশে বলা হয়েছে, কোনও দেশের তিন বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালনের জন্য পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভারতে আসা-যাওয়া করলেও তাদের কোনও শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে না। এছাড়া বিদেশি কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের ভিসার প্রয়োজন নেই।

দেশটির এই আইন বাস্তবায়নের ক্ষমতা রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোকে দেওয়া হয়েছে। সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনের বিধি লঙ্ঘনের জরিমানার পরিমাণও জানিয়ে দিয়েছে। তবে আইনে অব্যাহতি পাওয়া ছাড়া বৈধ পাসপোর্ট কিংবা ভিসা ছাড়া যারা ভারতে প্রবেশ করবেন, তাদের সংশ্লিষ্ট ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিসে ৫ লাখ রুপি জরিমানা দিতে হবে।

ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর অতিরিক্ত অবস্থানের জন্য ধাপে ধাপে জরিমানা দিতে হবে। আইনে বলা হয়েছে, তিব্বতি, মঙ্গোলিয়ার বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের দীর্ঘমেয়াদি ভিসাধারীদের অতিরিক্ত সময় ধরে অবস্থানের কারণে ৫০ থেকে ৫৫০ রুপি পর্যন্ত জরিমানা গুনতে হবে।

• জরিমানার পরিমাণ
* ৩০ দিন পর্যন্ত অতিরিক্ত অবস্থানকারীদের ১০ হাজার রুপি
* ৩১-৯০ দিন পর্যন্ত থাকলে ২০ হাজার রুপি
* ৯১-১৮০ দিন পর্যন্ত থাকলে ৫০ হাজার রুপি
* ১৮১ দিন থেকে এক বছরের বেশি থাকলে ১ লাখ রুপি
* এক বছরের বেশি হলে প্রতি অতিরিক্ত বছরের জন্য ৫০ হাজার রুপি করে জরিমানা দিতে হবে। তবে সর্বোচ্চ জরিমানার পরিমাণ ৩ লাখ রুপির মধ্যে সীমিত থাকবে।

Write Your Comment

About Author Information

Bangladesh Diplomat

পাসপোর্ট ছাড়া ভারতে প্রবেশ করা বাংলাদেশিদের জন্য নতুন নিয়ম চালু

Update Time : 09:52:13 pm, Wednesday, 3 September 2025

ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে পাসপোর্ট বা ভ্রমণ নথিপত্র ছাড়াই ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশসহ আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নাগরিকদের জন্য বড় ধরনের সুবিধা দিয়েছে ভারত সরকার। সোমবার থেকে কার্যকর হওয়া ভারতের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ফরেনার্স অ্যাক্ট-২০২৫ এর আওতায় ওই সংখ্যালঘুরা কোনও ধরনের শাস্তির মুখোমুখি হবেন না বলে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পাশাপাশি আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ধর্মীয় নির্যাতন থেকে বাঁচতে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সংখ্যালঘু হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পারসি ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের যে সদস্যরা পাসপোর্ট কিংবা অন্যান্য ভ্রমণ নথি ছাড়াই ভারতে প্রবেশ করেছেন, তারা সেখানে অবস্থানের অনুমতি পাবেন। এমনকি যাদের নথির মেয়াদ দেশটিতে প্রবেশের পর শেষ হয়ে গেছে, সোমবার থেকে কার্যকর হওয়া আইনের আওতায় তাদের বিরুদ্ধেও কোনও ধরনের শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে না।

সোমবার ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ফরেনার্স (এক্সেম্পশন) আদেশ ২০২৫ অনুযায়ী, নেপাল ও ভুটানের নাগরিকদের পাশাপাশি তিব্বতিরা, যারা ১৯৫৯ সাল থেকে ২০০৩ সালের ৩০ মের মধ্যে কাঠমান্ডুতে ভারতীয় দূতাবাস কর্তৃক জারি করা বিশেষ প্রবেশ অনুমতিপত্র নিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন এবং সংশ্লিষ্ট বিদেশি নিবন্ধন কর্মকর্তার কাছে নিবন্ধন করেছিলেন, তাদেরও একই ধরনের ছাড় দেওয়া হয়েছে।

তবে নেপাল ও ভুটানের নাগরিকরা যদি চীন, ম্যাকাও, হংকং বা পাকিস্তান হয়ে ভারতে প্রবেশ কিংবা প্রস্থান করেন, তাহলে তারা আইনের ২১ নম্বর ধারার সুবিধা পাবেন না। এই ধারা অনুযায়ী, বৈধ পাসপোর্ট অথবা ভিসা ছাড়া ভারতে প্রবেশ করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ৫ লাখ রুপি জরিমানা হতে পারে। ২৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী, ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ভারতে থেকে গেলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ৩ লাখ রুপি জরিমানা হতে পারে।

আইদেশে বলা হয়েছে, কোনও দেশের তিন বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালনের জন্য পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভারতে আসা-যাওয়া করলেও তাদের কোনও শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে না। এছাড়া বিদেশি কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের ভিসার প্রয়োজন নেই।

দেশটির এই আইন বাস্তবায়নের ক্ষমতা রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোকে দেওয়া হয়েছে। সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনের বিধি লঙ্ঘনের জরিমানার পরিমাণও জানিয়ে দিয়েছে। তবে আইনে অব্যাহতি পাওয়া ছাড়া বৈধ পাসপোর্ট কিংবা ভিসা ছাড়া যারা ভারতে প্রবেশ করবেন, তাদের সংশ্লিষ্ট ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিসে ৫ লাখ রুপি জরিমানা দিতে হবে।

ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর অতিরিক্ত অবস্থানের জন্য ধাপে ধাপে জরিমানা দিতে হবে। আইনে বলা হয়েছে, তিব্বতি, মঙ্গোলিয়ার বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের দীর্ঘমেয়াদি ভিসাধারীদের অতিরিক্ত সময় ধরে অবস্থানের কারণে ৫০ থেকে ৫৫০ রুপি পর্যন্ত জরিমানা গুনতে হবে।

• জরিমানার পরিমাণ
* ৩০ দিন পর্যন্ত অতিরিক্ত অবস্থানকারীদের ১০ হাজার রুপি
* ৩১-৯০ দিন পর্যন্ত থাকলে ২০ হাজার রুপি
* ৯১-১৮০ দিন পর্যন্ত থাকলে ৫০ হাজার রুপি
* ১৮১ দিন থেকে এক বছরের বেশি থাকলে ১ লাখ রুপি
* এক বছরের বেশি হলে প্রতি অতিরিক্ত বছরের জন্য ৫০ হাজার রুপি করে জরিমানা দিতে হবে। তবে সর্বোচ্চ জরিমানার পরিমাণ ৩ লাখ রুপির মধ্যে সীমিত থাকবে।