অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর টানা হামলায় আরও ৫৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন এক গর্ভবতী নারী এবং তার অনাগত শিশু।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, ইসরায়েলি বাহিনী গাজা সিটিতে ব্যাপক সামরিক অভিযান অব্যাহত রেখেছে। সোমবার শহরের শাতি শরণার্থী শিবিরের কাছে গর্ভবতী নারী ও তার অনাগত শিশুকে হত্যা করে ইসরায়েলি সেনারা। একই হামলায় আরও এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা।
গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, সোমবার একদিনেই পুরো গাজা উপত্যকায় ৫৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন ইসরায়েলি হামলায়।
এদিকে, ইসরায়েলি অবরোধ ও খাদ্যঘাটতির কারণে গাজার মানুষ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছেন। সোমবার অপুষ্টিজনিত কারণে আরও তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। চলমান যুদ্ধের মধ্যে এখন পর্যন্ত অনাহারে মারা গেছেন প্রায় ৩৫০ জন, যাদের এক-তৃতীয়াংশই শিশু।
আল জাজিরা আরও জানায়, গত এক মাসে ইসরায়েলি অভিযানে গাজার এক হাজারেরও বেশি ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। সোমবারের হামলাতেই ধ্বংসস্তূপে অন্তত ১০ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
নাসের স্ট্রিটের একটি ব্যস্ত বাজারেও হামলা চালায় ইসরায়েল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সেখানে চারজন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হন। আতঙ্কে মানুষজন চতুর্দিকে ছুটোছুটি শুরু করে।
আল জাজিরার সাংবাদিক মোয়াথ আল-খালুত বলেন, “মানুষ জানে না কোথায় যাবে, কী করবে। নিরাপদ আশ্রয়ের কোনো জায়গা নেই। শহরের প্রতিটি কোণায় ইসরায়েলি হামলা চলছে।”
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, গাজা শহরে ইসরায়েলের চলমান এই হামলা হয়তো পুরো শহর দখলের পূর্বপ্রস্তুতি। ইতোমধ্যে প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
গত শুক্রবার ইসরায়েল জানায়, তারা গাজা নগরী দখলের ‘প্রাথমিক ধাপ’ শুরু করেছে এবং এলাকাটিকে ‘যুদ্ধক্ষেত্র’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।