যুক্তরাষ্ট্রের পর এবার অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য ও কানাডা। আগামীকাল শুক্রবার লন্ডন থেকে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ১৮ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। তবে শেষ মুহূর্তে সংখ্যাটি পরিবর্তন হতে পারে।
এদিকে ঢাকায় নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার জানিয়েছেন, কানাডায় অবস্থানরত অবৈধ অভিবাসীদেরও ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। এর মধ্যে বাংলাদেশিরাও আছেন। তবে কতজন এবং কবে নাগাদ ফেরত পাঠানো হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি তিনি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবৈধ অভিবাসন শুধু আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে না, বরং বৈধ অভিবাসন প্রক্রিয়াকেও বাধাগ্রস্ত করছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সতর্ক করে বলেছেন— “আমরা যদি অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করতে না পারি, তাহলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে হবে।”
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, অভিবাসন ইস্যুটি এখন পশ্চিমা দেশগুলোর বড় রাজনৈতিক এজেন্ডায় পরিণত হয়েছে। ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় বিষয়টি সর্বাগ্রে চলে আসছে। শুধু গত ছয় মাসে ভূমধ্যসাগর হয়ে অবৈধভাবে ইতালিতে প্রবেশ করেছে ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি, যা মোট সংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ।
এ কারণে ইতালি ইতোমধ্যেই ভুয়া নথিপত্র জমাদানকারীদের কারণে বাংলাদেশিদের ভিসা প্রদানের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিয়েছে। ২০২৩ সালে যেখানে ১৬ হাজারের বেশি বাংলাদেশি ভিসা পেয়েছিলেন, সেখানে ২০২৪ সালে সংখ্যা নেমে আসে মাত্র ১১৬৪ জনে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশি ও আন্তর্জাতিক দালালচক্রের মাধ্যমে বহু বাংলাদেশি বিপুল অর্থ ব্যয় করে ভুয়া ওয়ার্ক পারমিট ও নথি ব্যবহার করছেন। ইতালিসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশে এ ধরনের জালিয়াতির কারণে বৈধ ভিসা আবেদনকারীরাও সমস্যায় পড়ছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই ৩৯ জন অবৈধ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে। এবার যুক্তরাজ্য ও কানাডার পদক্ষেপও একই ধারাবাহিকতার অংশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকার এ প্রক্রিয়ায় সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে এবং অবৈধভাবে কেউ বিদেশে অবস্থান করুক— সেটি কোনোভাবেই কাম্য নয়।