গাজায় দুর্ভিক্ষ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ইসরায়েলের অবরোধ ও হামলার কারণে মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা সৃষ্টি হওয়ায় বুধবার আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। জাতিসংঘের হিসাবে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ক্ষুধাজনিত কারণে এখন পর্যন্ত প্রাণহানি দাঁড়িয়েছে ৩১৩ জনে, এর মধ্যে ১১৯ শিশু।
জাতিসংঘের উপ-মানবিক প্রধান জয়েস মুসুয়া জানান, উত্তর গাজায় দুর্ভিক্ষ নিশ্চিত হয়েছে এবং শিগগিরই এটি দক্ষিণাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। বর্তমানে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ অনাহারে, যাদের সংখ্যা সেপ্টেম্বর শেষে ৬ লাখ ৪০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে পাঁচ বছরের নিচে অন্তত ১ লাখ ৩২ হাজার শিশু মারাত্মক পুষ্টিহীনতায় ভুগছে।
মানবিক সংগঠন সেভ দ্য চিলড্রেন সতর্ক করেছে যে, গাজায় শিশুদের মৃত্যুকে পরিকল্পিতভাবে ক্ষুধার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সংগঠনের প্রধান ইঙ্গার আশিং বলেন, শিশুদের কান্নার শক্তিও নেই, তারা নীরবে মৃত্যুর দিকে এগোচ্ছে।
এদিকে, ইসরায়েল আন্তর্জাতিক সংস্থা আইপিসি’র দুর্ভিক্ষ প্রতিবেদন প্রত্যাহারের দাবি তুললেও যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সব ১৪ সদস্য দেশ প্রতিবেদনটিকে সমর্থন জানায়। তারা যৌথ বিবৃতিতে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও দুর্ভিক্ষ বন্ধের আহ্বান জানায়।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওয়াশিংটনে শীর্ষ কূটনৈতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন যুদ্ধ-পরবর্তী গাজার পরিকল্পনা নিয়ে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যেই যুদ্ধের ‘সুনির্দিষ্ট সমাপ্তি’ ঘটবে, যদিও এখনো আলোচনায় বড় ধরনের অগ্রগতি হয়নি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যুদ্ধ-পরবর্তী স্পষ্ট পুনর্গঠন পরিকল্পনা না থাকলে গাজায় মানবিক সংকট আরও দীর্ঘায়িত হবে।