11:47 pm, Tuesday, 26 August 2025
কারাগারে কঠোর নিরাপত্তায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন

কারাগারে কঠোর নিরাপত্তায় ‘রাজসাক্ষী’ সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুন

Monzu-Info-Tech
Monzu-Info-Tech

ঢাকার কেরানীগঞ্জের বিশেষ কারাগারে অন্যসব প্রভাবশালী বন্দির চোখের আড়ালে রয়েছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। কর্মজীবনে যেমন তিনি বাহিনীর নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ছিলেন, বন্দিজীবনেও তেমনি বিশেষ নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা রয়েছেন।

তবে এবার তার চারপাশে পাহারা দিচ্ছেন কারারক্ষীরা। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়া এই সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা এখন সম্পূর্ণ গোপনীয়তা ও কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

আলাদা ভবনে একাকী বন্দিত্ব

কারা সূত্রে জানা গেছে, মামুনকে রাখা হয়েছে কারাগারের একটি বিশেষ ভবনে একাকী। সেখানে অন্য কোনো বন্দি প্রবেশ করতে পারেন না, এমনকি দূর থেকেও তাকে দেখা যায় না। ফলে একই কারাগারে থাকা সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, সালমান এফ রহমানসহ প্রায় ৬৫ জন প্রভাবশালী রাজনৈতিক বন্দিরাও জানেন না, তিনি কারাগারের কোন অংশে রয়েছেন।

বিশেষ সূত্র জানায়, তার দেখভালের জন্য নিয়োজিত রয়েছেন কিছু সাধারণ কয়েদি, যারা কেবল নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করেন। আদালতে নেওয়ার সময়ও তাকে একাই প্রিজন ভ্যানে আনা-নেওয়া করা হয়।

কারা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য

কেরানীগঞ্জ কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার বলেন, কারাগারে সব বন্দির সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে বিশেষ কারাগারে আলাদা রাখা হয়েছে। নির্দেশনা ছাড়া সেখানে কেউ প্রবেশ করতে পারে না। তিনি ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দি হিসেবে নিয়ম অনুযায়ী সব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন।

দোষ স্বীকার ও রাজসাক্ষী

২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৬ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এর আগে র‍্যাব মহাপরিচালক ও সিআইডি প্রধান ছিলেন।

গত ১০ জুলাই তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন করেন। আদালতে তিনি বলেন, জুলাই-আগস্ট আন্দোলন চলাকালে আমাদের বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যার অভিযোগ সত্য। আমি দোষ স্বীকার করছি এবং আদালতকে সহযোগিতা করতে চাই।

পরে ট্রাইব্যুনাল তার রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন মঞ্জুর করে শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয়।

Write Your Comment

About Author Information

Bangladesh Diplomat

হঠাৎ জ্বরে পড়লে কী করবেন: ঘরে যত্ন ও প্রতিকার

কারাগারে কঠোর নিরাপত্তায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন

কারাগারে কঠোর নিরাপত্তায় ‘রাজসাক্ষী’ সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুন

Update Time : 08:23:07 pm, Tuesday, 26 August 2025

ঢাকার কেরানীগঞ্জের বিশেষ কারাগারে অন্যসব প্রভাবশালী বন্দির চোখের আড়ালে রয়েছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। কর্মজীবনে যেমন তিনি বাহিনীর নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ছিলেন, বন্দিজীবনেও তেমনি বিশেষ নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা রয়েছেন।

তবে এবার তার চারপাশে পাহারা দিচ্ছেন কারারক্ষীরা। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়া এই সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা এখন সম্পূর্ণ গোপনীয়তা ও কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

আলাদা ভবনে একাকী বন্দিত্ব

কারা সূত্রে জানা গেছে, মামুনকে রাখা হয়েছে কারাগারের একটি বিশেষ ভবনে একাকী। সেখানে অন্য কোনো বন্দি প্রবেশ করতে পারেন না, এমনকি দূর থেকেও তাকে দেখা যায় না। ফলে একই কারাগারে থাকা সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, সালমান এফ রহমানসহ প্রায় ৬৫ জন প্রভাবশালী রাজনৈতিক বন্দিরাও জানেন না, তিনি কারাগারের কোন অংশে রয়েছেন।

বিশেষ সূত্র জানায়, তার দেখভালের জন্য নিয়োজিত রয়েছেন কিছু সাধারণ কয়েদি, যারা কেবল নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করেন। আদালতে নেওয়ার সময়ও তাকে একাই প্রিজন ভ্যানে আনা-নেওয়া করা হয়।

কারা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য

কেরানীগঞ্জ কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার বলেন, কারাগারে সব বন্দির সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে বিশেষ কারাগারে আলাদা রাখা হয়েছে। নির্দেশনা ছাড়া সেখানে কেউ প্রবেশ করতে পারে না। তিনি ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দি হিসেবে নিয়ম অনুযায়ী সব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন।

দোষ স্বীকার ও রাজসাক্ষী

২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৬ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এর আগে র‍্যাব মহাপরিচালক ও সিআইডি প্রধান ছিলেন।

গত ১০ জুলাই তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন করেন। আদালতে তিনি বলেন, জুলাই-আগস্ট আন্দোলন চলাকালে আমাদের বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যার অভিযোগ সত্য। আমি দোষ স্বীকার করছি এবং আদালতকে সহযোগিতা করতে চাই।

পরে ট্রাইব্যুনাল তার রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন মঞ্জুর করে শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয়।