ইয়েমেন থেকে আসা সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বড় ধরনের নিরাপত্তা উদ্বেগে পড়েছে ইসরায়েল। হুথি যোদ্ধাদের ছোড়া একটি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সম্প্রতি তেল আবিবের কাছাকাছি বিস্ফোরিত হয়, যা ইসরায়েলের শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে পৌঁছে যায় লক্ষ্যবস্তুতে। এই ঘটনায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মধ্যে নতুন করে সতর্কতা ও শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
শনিবার (২৪ আগস্ট) ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, ইয়েমেনি হুথি গোষ্ঠী হয়তো নতুন ধরনের হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করছে, যা তাদের আগের অস্ত্রগুলোর তুলনায় অনেক বেশি দ্রুতগামী ও নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে সক্ষম। ইসরায়েলের বিমানবাহিনী ইতোমধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, আকাশে ক্ষেপণাস্ত্রটি বিস্ফোরিত হয়ে একাধিক অংশে বিভক্ত হয়ে পড়ে এবং তা একাধিক স্থানে আঘাত হানে। এতে সন্দেহ করা হচ্ছে যে, ক্ষেপণাস্ত্রটিতে ক্লাস্টার মিউনিশন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। ইসরায়েল এখনো যাচাই করছে, এটি সত্যিই ইয়েমেনি হুথি বাহিনীর নিক্ষেপ করা অস্ত্র ছিল কি না।
ইয়েমেনি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, তারা ইসরায়েলের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে তেল আবিবের বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, একটি সামরিক ঘাঁটি এবং আশকেলন অঞ্চলের একটি কৌশলগত লক্ষ্যবস্তু। তারা ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্রটির নাম দিয়েছে ‘প্যালেস্টাইন-২’, যা একটি হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক মিসাইল হিসেবে চিহ্নিত।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে ইয়েমেনের হুথি যোদ্ধারা আকাশ ও সমুদ্রপথে ধারাবাহিক হামলা চালিয়ে আসছে। রেড সি বা লোহিত সাগরে তারা ইসরায়েলগামী বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে।
এছাড়া, চলতি আগস্টের শুরুতে ইয়েমেন সফলভাবে পরীক্ষামূলকভাবে উৎক্ষেপণ করে ‘সায়্যাদ’ নামের একটি নৌ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, যা দীর্ঘপাল্লার এবং রাডার এড়িয়ে আঘাত হানার ক্ষমতা রাখে।
ইয়েমেন স্পষ্ট করে জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ও অবরোধ যতদিন চলবে, ততদিন তারা প্রতিরোধমূলক হামলা অব্যাহত রাখবে। হুথিদের এই সামরিক সক্ষমতা এবং কৌশলগত বার্তায় ইসরায়েল যে বড় ধরনের নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।