বাংলাদেশের বহুল আলোচিত আবু সাঈদ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আরিফুজ্জামান ভারতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার স্বরূপনগর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে প্রবেশের সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ তাকে আটক করে।
গত শনিবার সন্ধ্যায় বিএসএফের ১৪৩ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের সদস্যরা হাকিমপুর সীমান্ত চৌকিতে টহলের সময় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে তাকে আটক করে। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে স্বরূপনগর থানায় হস্তান্তর করা হয়। ভারতীয় পুলিশ জানিয়েছে, তার কাছ থেকে একাধিক পরিচয়পত্র ও সরকারি নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৪৮ বছর বয়সী আরিফুজ্জামান বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার শাহীপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় এপিবিএন-২ ইউনিটে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত বছরের ১৪ অক্টোবর থেকে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন এবং এরপর থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন। এ কারণে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।
ভারতে বেআইনিভাবে প্রবেশের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ফরেনার্স অ্যাক্টের ১৪(এ) ধারা এবং পাসপোর্ট আইনের ১২ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার তাকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হলে আদালত ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পুলিশের ছোড়া গুলিতে নিহত হন শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। সংঘর্ষে ছাত্ররা পিছু হটলেও আবু সাঈদ লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় ৫০ ফুট দূর থেকে তাকে লক্ষ্য করে ছররা গুলি ছোড়া হয়। ঘটনাস্থলেই তিনি গুরুতর আহত হন এবং হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়।
ওই ঘটনার পর তদন্তে আরিফুজ্জামানের নাম উঠে আসে, যিনি তখন রংপুর মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাসীন দলের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এই পুলিশ কর্মকর্তা শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান বলে জানা গেছে।
সূত্রমতে, তিনি দীর্ঘদিন সাতক্ষীরা অঞ্চলে লুকিয়ে ছিলেন এবং পরে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করেন।