যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা (DIA) প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেফ্রি ক্রুসসহ তিন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাকে হঠাৎ বরখাস্ত করা হয়েছে। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ এই সিদ্ধান্ত নেন। বরখাস্ত হওয়া অন্য দুই কর্মকর্তা হলেন নৌ রিজার্ভ প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল ন্যান্সি ল্যাকোর এবং নেভাল স্পেশাল ওয়ারফেয়ার কমান্ডের প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল মিল্টন স্যান্ডস।
যদিও বরখাস্তের নির্দিষ্ট কারণ প্রকাশ করা হয়নি, তবে ধারণা করা হচ্ছে—ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পর ডিআইএ-এর দেওয়া ‘স্বচ্ছ ও বাস্তব’ মূল্যায়নই জেনারেল ক্রুসের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়।
ডিআইএ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুন মাসে মার্কিন হামলায় ইরানি পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর সীমিত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই বিশ্লেষণ ছিল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্যের সম্পূর্ণ বিপরীত, যেখানে তিনি দাবি করেছিলেন—ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা “সম্পূর্ণ ধ্বংস” করা হয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বরখাস্তগুলো ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিরক্ষা খাতে চলমান “বিশ্বাসভিত্তিক পুনর্বিন্যাসের” অংশ।
মার্কিন সিনেট গোয়েন্দা কমিটির সহসভাপতি মার্ক ওয়ার্নার এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, “জাতীয় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের বরখাস্তের প্রবণতা চিন্তাজনক। এখানে বস্তুনিষ্ঠতা নয়, বরং আনুগত্যের মূল্যায়নই মূল হয়ে উঠেছে।”
জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড এর আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন, প্রেসিডেন্টের নির্দেশে ৩৭ জন বর্তমান ও সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তার নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া গোয়েন্দা অফিসের ৪০% জনবল ছাঁটাই এবং ৭০০ মিলিয়ন ডলার বাজেট কমানোর ঘোষণা আসে—যার মাত্র দুই দিন পরই তিন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তার বরখাস্তের খবর আসে।
প্রতিরক্ষা সচিব হেগসেথ দাবি করেন, “প্রেসিডেন্ট শুধু এমন নেতৃত্ব চাইছেন, যাদের তিনি বিশ্বাস করতে পারেন।” তবে বিরোধী ডেমোক্র্যাটরা এসব সিদ্ধান্তকে মার্কিন সামরিক বাহিনীর রাজনৈতিকীকরণ হিসেবে দেখছেন।