ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, ক্ষমতার পালাবদল হলেও ধর্ম ও ধর্মীয় মূল্যবোধ নিয়ে শাসকগোষ্ঠীর দৃষ্টিভঙ্গিতে কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। তার ভাষায়, ‘ফ্যাসিস্ট আমলে’ সজীব ওয়াজেদ জয় মৌলবাদ রুখতে কঠোর অবস্থানের কথা বলেছিলেন, আর এখন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও একই সুরে কথা বলছেন। তাই তাঁর চোখে, “জয় ও তারেক রহমানের বক্তব্যের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।”
শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের ৩৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, এতদিন যেসব ইসলামপন্থিদের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়ে এসেছে, আজ তারা সেই শক্তির বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছে। একসময় মৌলবাদীদের পক্ষে কথা বললেও এখন বিপক্ষে সুর বদলানো তাদের দ্বিচারিতার প্রমাণ বলে মন্তব্য করেন ফয়জুল করীম। তিনি বলেন, “মৌলবাদীদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে বহু বছর। কিন্তু এখন তারা জেগে উঠেছে, বুঝে গেছে কে তাদের আপন, কে পর।”
দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “গত ৫৩ বছরে যারা ক্ষমতায় এসেছে, তারা কেউই জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে পারেনি। বারবার নির্বাচনী ইশতেহারে নানা দফা দেওয়া হলেও তা বাস্তবে রূপ নেয়নি। অথচ তারাই আবার ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে।”
বর্তমান পরিস্থিতিতে ইসলামপন্থিদের শক্তিশালী অবস্থান তৈরি হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি। বলেন, “৯২ শতাংশ মুসলমানের দেশে ইসলামি শাসন প্রতিষ্ঠা পাবে—এটা স্বাভাবিক। না হলে সেটাই বরং অস্বাভাবিক।”
তিনি আরও বলেন, বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মন্দিরে গিয়ে ধর্মীয় সম্প্রীতির নামে যেভাবে ইসলামি শাসনের বিরুদ্ধে ইঙ্গিত দিয়েছেন, তা গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির (পিআর) দাবি জানান।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইউসুফ আহমাদ মানসুর। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর)। সমাবেশ শেষে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।