2:03 pm, Tuesday, 19 August 2025

ক্ষুধা আর বোমায় গাজায় ৬২ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু

  • Akram
  • Update Time : 10:52:46 am, Tuesday, 19 August 2025
  • 9

ক্ষুধা আর বোমায় গাজায় ৬২ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু। ছবি: সংগৃহীত

Monzu-Info-Tech
Monzu-Info-Tech

ইসরায়েলের টানা প্রায় দুই বছরের সামরিক অভিযান ও অবরোধে গাজা উপত্যকায় প্রাণহানি ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছেছে। হামলা, ক্ষুধা ও অনাহারে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৬২ হাজার ছাড়িয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।

অবরুদ্ধ গাজায় কোথাও নিরাপদ আশ্রয় নেই। পরিবার-পরিজনের জন্য খাদ্য সংগ্রহ করতে বেরিয়ে প্রতিদিনই মানুষ নিহত হচ্ছেন। সোমবার ভোর থেকে চলমান হামলায় অন্তত ৩০ জন প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের মধ্যে ১৪ জন সাহায্যের আশায় অপেক্ষমাণ ছিলেন।

গাজার সবচেয়ে বড় নগরী গাজা সিটি কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ইসরায়েল সেখানে হামলা আরও জোরদার করেছে এবং হাজার হাজার মানুষকে দক্ষিণাঞ্চলে জোরপূর্বক সরিয়ে নিতে চাইছে। স্থানীয় চিকিৎসা সূত্র জানায়, আল-সাবরা এলাকায় বোমাবর্ষণে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে সাংবাদিক ইসলাম আল-কৌমিও রয়েছেন।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজা সিটির পূর্বাঞ্চলে ভারী কামান, যুদ্ধবিমান ও ড্রোন দিয়ে অবিরাম হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। সাংবাদিক তারেক আবু আজযুম মন্তব্য করেন, “হামলার ধরণ বলছে, গাজার ভৌগোলিক ও জনসংখ্যাগত কাঠামো পরিবর্তন করাই ইসরায়েলের লক্ষ্য।”

এ অবস্থায় বহুবার বাস্তুচ্যুত হওয়া মানুষ আবারও ঘরছাড়া হচ্ছেন। তবে আর্থিক অক্ষমতার কারণে অনেকে কোথাও যেতে পারছেন না। বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি বিলাল আবু সিত্তার আর্তি— “দক্ষিণে যেতে ৯০০ ডলার লাগে, অথচ আমার কাছে এক ডলারও নেই। আমি কোথায় যাব?”

অন্যদিকে অনেকে ইসরায়েলের আশ্রয় ও সাহায্যের প্রতিশ্রুতিতে আস্থা রাখছেন না। নোয়ামান হামাদ বলেন, “আমরা কিছু চাই না, শুধু আমাদের ঘরে ফেরার অনুমতি দিক।”

এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেই কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব সামনে এসেছে। সূত্র জানায়, প্রস্তাবটি মেনে নিয়েছে হামাস। চুক্তি কার্যকর হলে ৬০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতি হবে, বিনিময়ে বন্দি অদলবদলও হতে পারে।

তবে ফিলিস্তিনিরা আশঙ্কা করছেন, আগের মতো এবারও প্রতিশ্রুতির পর তা ভেঙে দেওয়া হতে পারে। বছরের শুরুতে স্বল্পস্থায়ী যুদ্ধবিরতি মার্চ মাসে ভেঙে দেওয়ার পর থেকেই গাজার সংকট সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নিয়েছে।

Write Your Comment

About Author Information

Akram

ক্ষুধা আর বোমায় গাজায় ৬২ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু

Update Time : 10:52:46 am, Tuesday, 19 August 2025

ইসরায়েলের টানা প্রায় দুই বছরের সামরিক অভিযান ও অবরোধে গাজা উপত্যকায় প্রাণহানি ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছেছে। হামলা, ক্ষুধা ও অনাহারে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৬২ হাজার ছাড়িয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।

অবরুদ্ধ গাজায় কোথাও নিরাপদ আশ্রয় নেই। পরিবার-পরিজনের জন্য খাদ্য সংগ্রহ করতে বেরিয়ে প্রতিদিনই মানুষ নিহত হচ্ছেন। সোমবার ভোর থেকে চলমান হামলায় অন্তত ৩০ জন প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের মধ্যে ১৪ জন সাহায্যের আশায় অপেক্ষমাণ ছিলেন।

গাজার সবচেয়ে বড় নগরী গাজা সিটি কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ইসরায়েল সেখানে হামলা আরও জোরদার করেছে এবং হাজার হাজার মানুষকে দক্ষিণাঞ্চলে জোরপূর্বক সরিয়ে নিতে চাইছে। স্থানীয় চিকিৎসা সূত্র জানায়, আল-সাবরা এলাকায় বোমাবর্ষণে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে সাংবাদিক ইসলাম আল-কৌমিও রয়েছেন।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজা সিটির পূর্বাঞ্চলে ভারী কামান, যুদ্ধবিমান ও ড্রোন দিয়ে অবিরাম হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। সাংবাদিক তারেক আবু আজযুম মন্তব্য করেন, “হামলার ধরণ বলছে, গাজার ভৌগোলিক ও জনসংখ্যাগত কাঠামো পরিবর্তন করাই ইসরায়েলের লক্ষ্য।”

এ অবস্থায় বহুবার বাস্তুচ্যুত হওয়া মানুষ আবারও ঘরছাড়া হচ্ছেন। তবে আর্থিক অক্ষমতার কারণে অনেকে কোথাও যেতে পারছেন না। বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি বিলাল আবু সিত্তার আর্তি— “দক্ষিণে যেতে ৯০০ ডলার লাগে, অথচ আমার কাছে এক ডলারও নেই। আমি কোথায় যাব?”

অন্যদিকে অনেকে ইসরায়েলের আশ্রয় ও সাহায্যের প্রতিশ্রুতিতে আস্থা রাখছেন না। নোয়ামান হামাদ বলেন, “আমরা কিছু চাই না, শুধু আমাদের ঘরে ফেরার অনুমতি দিক।”

এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেই কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব সামনে এসেছে। সূত্র জানায়, প্রস্তাবটি মেনে নিয়েছে হামাস। চুক্তি কার্যকর হলে ৬০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতি হবে, বিনিময়ে বন্দি অদলবদলও হতে পারে।

তবে ফিলিস্তিনিরা আশঙ্কা করছেন, আগের মতো এবারও প্রতিশ্রুতির পর তা ভেঙে দেওয়া হতে পারে। বছরের শুরুতে স্বল্পস্থায়ী যুদ্ধবিরতি মার্চ মাসে ভেঙে দেওয়ার পর থেকেই গাজার সংকট সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নিয়েছে।