হঠাৎ শুরু হওয়া প্রবল বর্ষণ ও তীব্র মেঘভাঙা বৃষ্টির ফলে ভয়াবহ দুর্যোগের কবলে পড়েছে পাকিস্তান। গত দুই দিনে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ২০০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খাইবার পাখতুনখোয়ার বুনের, বাজাউর ও বাটগ্রাম এলাকা।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিতে বহু মানুষ ভূমিধসে চাপা পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন। শুধু বুনের অঞ্চল থেকেই শুক্রবার পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে ১৫৭টি মরদেহ। এর মধ্যে গাডেজি তহশিলেই মৃত্যু হয়েছে ১২০ জনের। চাঘারজাই এলাকায় একটি ভবন ধসে একই পরিবারের ২২ জন নিহত হয়েছেন।
ত্রাণসামগ্রী পৌঁছাতে গিয়ে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনার মুখে পড়ে একটি হেলিকপ্টার। বিধ্বস্ত ওই হেলিকপ্টারে থাকা দুই পাইলটসহ পাঁচজনই নিহত হন। এদিকে, পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীরের নীলম ও ঝিলম উপত্যকায় ভূমিধসে আটজনের মৃত্যু হয়েছে এবং প্রায় ৫০০ পর্যটক সেখানে আটকা পড়েছেন।
পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে খাইবার পাখতুনখোয়াকে ‘দুর্যোগপীড়িত এলাকা’ ঘোষণা করার প্রস্তাব উঠেছে বলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
খাইবার পাখতুনখোয়া প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (PDMA) জানায়, শুধুমাত্র গত ২৪ ঘণ্টায় প্রদেশটিতে প্রাণ হারিয়েছেন ১৮৯ জন। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন ১৬৩ জন পুরুষ, ১৪ জন নারী ও ১২ শিশু। হিগুকান্দ ও পীর বাবা এলাকায় এখনো অনেক নারী ও শিশু আটকা পড়ে আছেন। ভয়াবহ বন্যায় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে ‘আল মদিনা’ নামের একটি হোটেল।
উদ্ধারকাজে অংশ নিচ্ছে সেনাবাহিনী, জাতীয় এবং প্রাদেশিক দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী। প্রশাসনের আশঙ্কা, দুর্যোগপূর্ণ এ পরিস্থিতিতে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।