ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলায় ফের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বোমা ও গুলির আঘাতে কমপক্ষে ১০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু গাজা সিটিতেই নিহত হয়েছেন ৬১ জন।
এছাড়া, ত্রাণ সংগ্রহে আসা মানুষের ওপর হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৩৭ জন। পাশাপাশি, ক্ষুধা ও অপুষ্টির কারণে আরও ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
চিকিৎসা ও উদ্ধার সংস্থাগুলোর বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার ভোর থেকে গাজার বিভিন্ন অংশে ইসরায়েলি হামলা শুরু হয়। উত্তর গাজা ও গাজা সিটিতে হামলার তীব্রতা ছিল সবচেয়ে বেশি।
ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে হামলায় গাজা সিটির উত্তরে অন্তত ১২ জন এবং রাফাহর উত্তরে আরও ১৬ জন নিহত হন।
গাজার জরুরি ও অ্যাম্বুলেন্স বিভাগ জানিয়েছে, ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করা মানুষের ওপর গুলি চালানোয় আরও ১৪ জন নিহত এবং ১১৩ জন আহত হয়েছেন। সব মিলিয়ে একদিনে খাদ্যের খোঁজে থাকা ৩৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
অবরুদ্ধ গাজায় খাদ্য, ওষুধ ও জ্বালানির চরম ঘাটতির ফলে বিপর্যয়কর মানবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ক্ষুধা ও অপুষ্টিজনিত কারণে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত শুধুমাত্র ক্ষুধায় মারা গেছেন ২৩৫ জন, যার মধ্যে ১০৬ শিশু।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (UNRWA)-এর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি এক্স-এ দেওয়া বার্তায় বলেন, “গাজায় শিশু ও শৈশবের ওপর চলা যুদ্ধের এটি সাম্প্রতিকতম উদাহরণ। শুধু ক্ষুধা নয়, বোমা হামলায় নিহত বা আহত হয়েছে ৪০ হাজারের বেশি শিশু। আরও রয়েছে অন্তত ১৭ হাজার এতিম ও পরিবারের থেকে বিচ্ছিন্ন শিশু।”
তিনি বলেন, ১০ লাখ শিশু শিক্ষা থেকে বঞ্চিত এবং অনেকেই গভীর মানসিক আঘাত নিয়ে বেঁচে আছে।
তার সংক্ষিপ্ত কিন্তু শক্তিশালী বার্তা ছিল, “শিশু মানে শিশু। তারা যেখানেই থাকুক না কেন, গাজা হোক বা অন্য কোথাও, শিশুদের মৃত্যু ও ভবিষ্যৎ কেড়ে নেওয়ার ঘটনায় নীরব থাকা মানবতার পরাজয়।”