দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, লিভার, কিডনি, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এর মধ্যে লিভার, কিডনি এবং হৃদরোগকে তার চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বারবার খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর চেষ্টা হলেও তা সম্ভব হয়নি। অনেকটা বাধ্য হয়ে, বিদেশ থেকে চিকিৎসক এনে পোর্টো সিস্টেমেটিক অ্যানেসটোমেসি পদ্ধতির মাধ্যমে লিভারের চিকিৎসা শুরু হয়। যদিও সে সময় বিদেশি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার জন্য মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশ ছিল যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং জার্মানির হাসপাতালের জন্য।
তবে জিয়া অরফ্যানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা প্রাপ্তির কারণে খালেদা জিয়া বিদেশে যেতে পারেননি। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাকে কারাগারে পাঠানো হয় এবং তার স্বাস্থ্যের অবনতির বিষয়টি পরিবার এবং দলের পক্ষ থেকে বারবার জানানো হয়। ২০২০ সালের কোভিড মহামারীর সময় তাকে মুক্তি দেওয়া হলেও, শর্ত ছিল তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং বিদেশে যেতে পারবেন না।
নির্বাহী আদেশে মুক্তি পাওয়ার পর খালেদা জিয়া নিয়মিতভাবে আবাসস্থল ফিরোজা এবং এভারকেয়ার হাসপাতালের মধ্যে যাতায়াত করতে থাকেন। বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য ছয়বার আবেদন করা হলেও, তাতে কোনো সাড়া দেয়নি তৎকালীন সরকার।
৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর খালেদা জিয়ার সাজা বাতিল হয় এবং তখন থেকেই তার বিদেশে চিকিৎসার ব্যাপারে আলোচনা শুরু হয়। জানা গেছে, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়ার জন্য তার শারীরিক অবস্থা এবং প্রস্তুতি নিতে কিছু সময় লেগেছে।
অবশেষে, ৭ জানুয়ারি রাতে খালেদা জিয়া ঢাকা ছাড়ছেন যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে। লন্ডনে পৌঁছানোর পর তাকে স্বাগত জানাবেন তার ছেলে তারেক রহমান ও পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান। সেখান থেকেই তিনি সরাসরি লন্ডন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে যাবেন। প্রায় সাত বছর পর চিকিৎসার জন্য তিনি বিদেশ সফরে যাচ্ছেন এবং সেই সাথে আবারও দেখা হবে মা-ছেলের, যা ২০১৭ সালের পর সরাসরি প্রথম।
বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের লাখো কর্মী-সমর্থকরা আশা করছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আবার দলের নেতৃত্বে এগিয়ে যাবেন।