3:41 am, Sunday, 5 January 2025

নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে শঙ্কা কাটছে না বিএনপির

  • Akram
  • Update Time : 09:27:14 am, Thursday, 2 January 2025
  • 27

শঙ্কা কাটছে না বিএনপির নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে

Monzu-Info-Tech
Monzu-Info-Tech

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতন হলেও বিএনপির মধ্যে শঙ্কা কাটছে না। ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের পতন পরবর্তী সময়ে বিএনপিতে স্বস্তি ফিরলেও, নতুন রাজনৈতিক পরিস্থিতি দলের জন্য নানা সংশয়ের জন্ম দিচ্ছে। শেখ হাসিনার পতনের পর বিরোধী দল হিসেবে বিএনপি কিছুটা স্বাভাবিক রাজনীতি করার সুযোগ পেলেও, দলের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছেন।

প্রথমদিকে বিএনপির মধ্যে ছিল আস্থা, তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন ধরনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ, সরকারের উদ্দেশ্য ও সময়সীমা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা না পাওয়ায় দলের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের পুনর্বাসন এবং মাইনাস টু ফর্মুলার তত্ত্বের উপস্থিতি বিএনপির মধ্যে শঙ্কা আরও বাড়িয়েছে। বিএনপি দাবি করছে, নির্বাচনের পথ রোধ করতে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চলছে।

বিএনপির মতে, বর্তমানে দেশের সবচেয়ে বড় ইস্যু হচ্ছে নির্বাচন। দলের দাবি, ভোটের অধিকার এবং গণতন্ত্রের পথে কোনো বিলম্বের সুযোগ নেই। তারা মনে করে, সংকট সৃষ্টি করে নির্বাচনের তারিখ আরও বিলম্বিত করার চেষ্টা চলছে। সম্প্রতি, বৈষম্য-বিরোধী ছাত্র আন্দোলনও নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। বিএনপি মনে করছে, এই আন্দোলনের পেছনে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের কিছু অংশের হাত রয়েছে, যারা নির্বাচনের বিরোধিতা করে অগণতান্ত্রিক ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, তাদের দলের সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করা। তিনি জানান, কেউ কেউ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে চাইছেন না, বরং ক্ষমতাকে দীর্ঘ সময় ধরে কুক্ষিগত রাখতে চাচ্ছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে এটাও পরিষ্কার করা হয়েছে যে, মাইনাস টু ফর্মুলার মতো কোনও ষড়যন্ত্রের চেষ্টা সফল হবে না।

বিএনপি মনে করছে, সংবিধান বাতিল করে দেশের রাজনৈতিক সংকট তৈরি করার ষড়যন্ত্র চলছে। তারা দাবি করছে, এ ধরনের সংকট সৃষ্টি করলে দীর্ঘ সময়ের জন্য অরাজনৈতিক ব্যক্তিরা ক্ষমতায় আসতে পারেন, যা তাদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। অতীতে রাষ্ট্রপতি অপসারণ ইস্যুতে এমন চক্রান্তের ঘটনা ঘটেছিল বলে বিএনপি মনে করছে, এখনো সেই পরিকল্পনা চলছে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির মহাসচিব হিসেবে বলেন, তারা বারবার বলছেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একধরনের চক্রান্ত শুরু হয়েছে, যেটা তাদের নেত্রীকে ৬ বছর জেলে থাকতে বাধ্য করেছিল এবং এখনো তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে বিদেশে থাকতে হচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের পক্ষে যারা রয়েছে, তাদের ওপর এ ধরনের ষড়যন্ত্রের কোনো প্রভাব পড়বে না।

এদিকে, ‘প্রক্লেমেশন অব জুলাই রেভল্যুশন’ কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র নেতাদের সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয় বিএনপির। গত শনিবার যখন এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়, তখন বিএনপির সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই ঘোষণা দেওয়ায় তাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের জানান, বিএনপি এই কর্মসূচির বিরোধিতা করছে। তবে, বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারকে জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র তৈরির কাজ করতে উৎসাহিত করেছে।

Write Your Comment

About Author Information

Akram

কনক্রিট হল ব্লক- বাড়ির শক্ত ভিতের জন্য সেরা পছন্দ

নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে শঙ্কা কাটছে না বিএনপির

Update Time : 09:27:14 am, Thursday, 2 January 2025

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতন হলেও বিএনপির মধ্যে শঙ্কা কাটছে না। ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের পতন পরবর্তী সময়ে বিএনপিতে স্বস্তি ফিরলেও, নতুন রাজনৈতিক পরিস্থিতি দলের জন্য নানা সংশয়ের জন্ম দিচ্ছে। শেখ হাসিনার পতনের পর বিরোধী দল হিসেবে বিএনপি কিছুটা স্বাভাবিক রাজনীতি করার সুযোগ পেলেও, দলের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছেন।

প্রথমদিকে বিএনপির মধ্যে ছিল আস্থা, তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন ধরনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ, সরকারের উদ্দেশ্য ও সময়সীমা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা না পাওয়ায় দলের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের পুনর্বাসন এবং মাইনাস টু ফর্মুলার তত্ত্বের উপস্থিতি বিএনপির মধ্যে শঙ্কা আরও বাড়িয়েছে। বিএনপি দাবি করছে, নির্বাচনের পথ রোধ করতে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চলছে।

বিএনপির মতে, বর্তমানে দেশের সবচেয়ে বড় ইস্যু হচ্ছে নির্বাচন। দলের দাবি, ভোটের অধিকার এবং গণতন্ত্রের পথে কোনো বিলম্বের সুযোগ নেই। তারা মনে করে, সংকট সৃষ্টি করে নির্বাচনের তারিখ আরও বিলম্বিত করার চেষ্টা চলছে। সম্প্রতি, বৈষম্য-বিরোধী ছাত্র আন্দোলনও নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। বিএনপি মনে করছে, এই আন্দোলনের পেছনে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের কিছু অংশের হাত রয়েছে, যারা নির্বাচনের বিরোধিতা করে অগণতান্ত্রিক ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, তাদের দলের সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করা। তিনি জানান, কেউ কেউ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে চাইছেন না, বরং ক্ষমতাকে দীর্ঘ সময় ধরে কুক্ষিগত রাখতে চাচ্ছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে এটাও পরিষ্কার করা হয়েছে যে, মাইনাস টু ফর্মুলার মতো কোনও ষড়যন্ত্রের চেষ্টা সফল হবে না।

বিএনপি মনে করছে, সংবিধান বাতিল করে দেশের রাজনৈতিক সংকট তৈরি করার ষড়যন্ত্র চলছে। তারা দাবি করছে, এ ধরনের সংকট সৃষ্টি করলে দীর্ঘ সময়ের জন্য অরাজনৈতিক ব্যক্তিরা ক্ষমতায় আসতে পারেন, যা তাদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। অতীতে রাষ্ট্রপতি অপসারণ ইস্যুতে এমন চক্রান্তের ঘটনা ঘটেছিল বলে বিএনপি মনে করছে, এখনো সেই পরিকল্পনা চলছে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির মহাসচিব হিসেবে বলেন, তারা বারবার বলছেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একধরনের চক্রান্ত শুরু হয়েছে, যেটা তাদের নেত্রীকে ৬ বছর জেলে থাকতে বাধ্য করেছিল এবং এখনো তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে বিদেশে থাকতে হচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের পক্ষে যারা রয়েছে, তাদের ওপর এ ধরনের ষড়যন্ত্রের কোনো প্রভাব পড়বে না।

এদিকে, ‘প্রক্লেমেশন অব জুলাই রেভল্যুশন’ কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র নেতাদের সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয় বিএনপির। গত শনিবার যখন এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়, তখন বিএনপির সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই ঘোষণা দেওয়ায় তাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের জানান, বিএনপি এই কর্মসূচির বিরোধিতা করছে। তবে, বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারকে জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র তৈরির কাজ করতে উৎসাহিত করেছে।